
ছবি: সংগৃহীত
জাম একটি গ্রীষ্মমৌসুমী ফল। এটি কেবল সুস্বাদুই নয়, বরং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণেও ভরপুর। সাধারণত এর আমরা জামের বিচি ফেলে দিই। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, জামের বীজ গুঁড়া করে খাওয়া হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা পর্যন্ত। খালি পেটে জামের বীজের গুঁড়া খাওয়ার পাঁচটি উপকারিতা জেনে নিন-
১. রক্তে শর্করার মাত্রায় ভারসাম্য: ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন রোগীদের জন্য জামের বীজের গুঁড়া দারুণ উপকারী বলে মনে করা হয়। কারণ জাম্বোলিন এবং অ্যালকালয়েডের মতো যৌগের উপস্থিতি। এ দুটিই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পরিচিত। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অফ ট্রপিক্যাল বায়োমেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, জামের বীজের নির্যাস ডায়াবেটিক ইঁদুরের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। যা এর ডায়াবেটিস-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকার প্রমাণ দেয়।
২. হজমশক্তি বৃদ্ধি: আপনি কি হজমের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে জামের বীজের গুঁড়া খাওয়া উপকারী হতে পারে। এটি হজম স্বাস্থ্যের জন্য এটি এত ভালো কেন? কারণ এর অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট এবং কার্মিনেটিভ বৈশিষ্ট্যে, যা পাচনতন্ত্রকে প্রশমিত করে। সকালে খালি পেটে এ বীজের গুঁড়া খেলে অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে। সেইসঙ্গে পেট ফাঁপা এবং অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দিতে পারে।
আরওপড়ুন<<>>লিভার ভালো রাখতে যে ৭ খাবার খাবেন
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: জামের বীজের গুঁড়া খাওয়ার আরেকটি আশ্চর্যজনক সুবিধা হলো- এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ। যা ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। একবার আপনি নিয়মিত এর গুঁড়া খাওয়া শুরু করলে, লক্ষ্য করবেন যে অসুস্থ হওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি অনেকটাই কমে গেছে।
৪. ওজন কমানো: ওজন কমানো বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তবে জামের বীজের গুঁড়া খেলে তা সহজ হতে পারে। উচ্চ ফাইবারের কারণে খালি পেটে এটি খেলে ক্ষুধা কমতে পারে এবং পেট ভরে যেতে পারে। এটি দিনের বেলা অতিরিক্ত খাওয়াও প্রতিরোধ করতে পারে। দ্য ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ওবেসিটির মতে, জাম ফ্যাট বিপাক রোধ করতে এবং চর্বি জমা কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
৫. ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত: যেহেতু জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ। তাই এটি আমাদের ত্বকের জন্যও দুর্দান্ত। এই বৈশিষ্ট্যগুলো ব্রণ, পিগমেন্টেশন এবং কালচে দাগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, এর গুঁড়া খেলে অকাল বার্ধক্য এবং নিস্তেজ ত্বকও প্রতিরোধ করা যায়। তাই আপনি যদি সুস্থ এবং উজ্জ্বল ত্বক অর্জন করতে চান, তাহলে জামের বীজের গুঁড়া খাওয়া শুরু করুন।
আপন দেশ/এমএইচ