ছবি: সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার প্রভাবে প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ২১ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে দ্বীপদেশটির গণমাধ্যমগুলো। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে দেশটি আবহাওয়াজনিত এমন দুর্যোগ আর দেখেনি, বলছে বিবিসি।
মধ্যাঞ্চলীয় চা-উৎপাদনকারী জেলা বাদুল্লায় ভূমিধসে ঘরের ভেতর চাপা পড়ে ২১ জন নিহত হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি)।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে ছোট-বড় শগরগুলোতে বন্যার পানিতে বাড়িঘর ভেসে যেতে দেখা যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রও খোলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া এখন ত্রিণকোমালের আনুমানিক ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে বলে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮টায় শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া বিভাগের বরাত দিয়ে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ডেইলি মেইল। সামনের কয়েক ঘণ্টায় ঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিমে সরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়ার এমন রোষে ১২ হাজার ৩১৩টি পরিবারের ৪৩ হাজার ৯৯১ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমসি। ঝড়ে ৪টি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে, একাধিক জেলার ৬৬৬টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উজানের এলাকাগুলোতে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কেলানি নদী উপত্যকার নিচু এলাকাগুলোতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বড় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে শ্রীলঙ্কার সেচ বিভাগ। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শুক্রবারও দ্বীপদেশটিতে তুমুল বৃষ্টির আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন<<>>হংকংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০০ ছুঁই ছুঁই
শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে যাত্রা শুরু করা দিতওয়া পরে শক্তি অর্জন করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি ভারতের কোথাও আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃষ্টির কারণে শ্রীলঙ্কাজুড়ে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে, যে কারণে ডিএমসি নিচু এলাকার বাসিন্দাদের যত দ্রুত সম্ভব উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে পরামর্শও দিয়েছে। রাজধানী কলম্বোও তুমুল বন্যার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
শুক্রবার দেশটির মধ্যাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কার করছে আবহাওয়া বিভাগ।
বিভিন্ন প্রদেশকে সংযুক্ত করা মহাসড়কগুলো বন্ধ হয়ে পড়েছে, অনেক এলাকায় ট্রেন যোগাযোগও বিঘ্নিত হচ্ছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় কর্তৃপক্ষ এ-লেভেল পরীক্ষাও স্থগিত ঘোষণা করেছে।
শ্রীলঙ্কায় এখন বর্ষাকাল চললেও আবহাওয়ার এমন রুদ্র রূপ দেশটিতে বিরল। দ্বীপদেশটিতে এ শতকে সবচেয় ভয়াবহ বন্যায় ২০০৩ সালে ২৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল, ঘরছাড়া হয়েছিল কয়েক লাখ মানুষ।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































