ছবি: সংগৃহীত
হংকংয়ের তাই পো ডিস্ট্রিক্টের সরকারি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৪ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) মৃতের এ সংখ্যা জানায় হংকংয়ের ফায়ার ডিপার্টমেন্ট। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
এছাড়া ভবনগুলোর প্রায় তিনশো বাসিন্দা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানা গেছে। এ ঘটনায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শোক প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে চীনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান সিসিটিভি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, একটি নির্মাণ কোম্পানির তিন জন কর্মকর্তাকে এ অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন পরিচালক এবং একজন ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্ট। তাদের বিরুদ্ধে ভবন নির্মানে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এমন উপকরণ, যেমন বাঁশ, পলিস্টাইরিন ফোম ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
ওয়াং ফুক কোর্ট নামে ওই অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে গত ১৮ ঘণ্টা ধরে জ্বলা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আট শতাধিক বেশি দমকল কর্মী কাজ করেন। তাইপো ডিস্ট্রিক্টের এ ওয়াং ফুক কোর্ট মূলত একটি আবাসিক কমপ্লেক্স। আটটি টাওয়ার ব্লক নিয়ে এ কমপ্লেক্স। প্রতিটি ভবন ৩১ তলা উঁচু।
২০২১ সালের সরকারি আদমশুমারি অনুযায়ী, এ আবাসিক কমপ্লেক্সে প্রায় চার হাজার ৬০০ মানুষের জন্য এক হাজার ৯৮৪টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। ১৯৮৩ সালে নির্মিত এ টাওয়ার ব্লকগুলোতে সংস্কার কাজ চলছিল। ভবনগুলো বাইরে থেকে বাঁশের আচ্ছাদন দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর দুইটা ৫১ মিনিটে এ কমপ্লেক্সে আগুন লাগে। বিভিন্ন ফুটেজে দেখা গেছে, বাঁশের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। হংকংয়ের সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে এ আগুনকে লেভেল ফাইভ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশটির ফায়ার ডিপার্টমেন্ট।
আরও পড়ুন<<>>বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রতি জাতিসংঘের কৃতজ্ঞতা
সবশেষ ১৭ বছর আগে হংকংয়ে এমন ব্যাপক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল। এদিকে আগুন নেভানোর সময় মারা যাওয়া ৩৭ বছর বয়সী একজন দমকল কর্মীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে সরকার। তাকে একজন ‘নিবেদিত প্রাণ এবং সাহসী’ ব্যক্তি হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়েছে।
এদিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর ওই স্থানের নিকটবর্তী স্কুলগুলোতে ক্লাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। হংকং শিক্ষা ব্যুরো জানিয়েছে, চলমান অগ্নি নির্বাপন কার্যক্রমের সময় যানজট সৃষ্টি হওয়ায় বৃহস্পতিবার ১৩টি স্কুলে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়।
আগুন লাগার কারণ নিয়ে এখনো তদন্ত করা হচ্ছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ওই স্থানে সংস্কার কাজ চলছে এবং সেখানে পলিস্টাইরিন বোর্ড পাওয়া গেছে। এগুলো দিয়ে সাইটের জানালা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল, সম্ভবত সে কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, যারা কোম্পানির দায়িত্বে ছিলেন তাদের বড় ধরনের গাফিলতি রয়েছে। যার ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাঁশের পাতলা চাটাই ধরনের আচ্ছাদনের কারণে আগুন দ্রুত পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে অ্যাপার্টমেন্ট টাওয়ারগুলোর শত শত বাসিন্দাকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং স্থানান্তরের প্রয়োজন এমন মানুষদের জন্য জরুরি আবাসন ইউনিট বরাদ্দ করা হচ্ছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































