
ছবি : আপন দেশ
কুমিল্লার হোমনায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে মাজারে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২২০০ অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমনা থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে হোমনা থানার এসআই তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এলাকায় এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন রাখা হয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি ফেসবুক আইডি থেকে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে এক যুবক পোস্ট দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা থানার সামনে জড়ো হয়ে ওই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। পরে দুপুরের দিকে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুব সেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
আরও পড়ুন<<>>লিবিয়ায় মাফিয়াদের গুলিতে নিহত মাদারীপুরের জীবন
এদিকে ফেসবুকে ওই পোস্টকে কেন্দ্র বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামের কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা-ভাঙচুর করে। ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে আসাদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মামলা ও গ্রেফতর আতংকে এলাকা অনেকটা পুরুষ শূন্য। পুড়ে যাওয়া মাজারের সামনে কথা হয় গ্রেফতার যুবকের মা মিনুয়ারা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছেলে কে তো পুলিশের হাতে তুলে দিলাম। এরপরও আমাদের মাজার ও বাসা বাড়িতে কেন আগুন দেয়া হলো। পুলিশ কোন নিরাপত্তা দিতে পারলো না কেন? এক কাপড়ে ঘর থেকে বের হই। টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ কোনো মালামাল রক্ষা করতে পারিনি। জীবনটা কোনো মতে রক্ষা করেছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান ঘটনাস্থল ঘুরে এসে জানিয়ে ছিলেন, ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেয়ার পর তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা ঘটনার উস্কানি দিয়ে মাজারে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।