
ছবি সংগৃহীত
ইসরায়েলি আগ্রাসনে মৃত্যুপুরী অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক বির্পয় দেখা দিয়েছে। একদিকে দখলদার সেনবাহিনীর হামলা, অন্যদিকে ক্ষুধার জ্বালা। গুলি-বোমা আর অনাহারে অবিরত মরছে ফিলিস্তিনিরা। গত ২৪ ঘন্টায় ইসরায়েলি সেনাদের নৃশংস হামলায় আরও ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬১ হাজার ৩৩০ জনে পৌঁছেছে।
শনিবার (০৯ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর বার্তা সংস্থা আনাদোলু’র।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবারের ইসরায়েলি হামলার পর গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬১ হাজার ৩৩০ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে যেসব নিহত ও আহতকে আনা সম্ভব হয়েছে— কেবল তাদেরকেই ধরা হয়েছে হিসেবের মধ্যে। ধ্বংসস্তূপের তলায় এবং সড়কে এমন অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে—যাদের হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়নি। প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণের ফলে উদ্ধারকাজ ব্যহত হচ্ছে। ফলে ইসরায়েলের অভিযানে আহত ও নিহতের মোট সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর পাশাপাশি সেখানে খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রীর প্রবেশও সীমিত করেছে ইসরায়েল। ফলে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সেখানে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় না খেতে পেয়ে এবং অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের। এদের মধ্যে ৯৮ জনই শিশু।
খাদ্য ও ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদেরও নির্বিচারে গুলি করছে ইসরায়েলি সেনারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ত্রাণ নিতে গিয়ে গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৭৭২ জন। তাদের মধ্যে ১৬ জন নিহত হয়েছেন শুক্রবার।
আরও পড়ুন<<>>আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক ১৫ আগস্ট
অপুষ্টিজনিত কারণে যাদের মৃত্যু হয়েছে এবং ত্রাণ নিতে গিয়ে যারা নিহত হয়েছেন, তাদেরকেও মোট নিহত ও আহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা। এদিন ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
এছাড়া গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি উপত্যকাটিতে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও রয়েছে ইসরাইল।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।