Apan Desh | আপন দেশ

বিয়ন্সের ওয়ার্ল্ড ট্যুরে কেন উদ্বিগ্ন পরিবেশবাদীরা

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:০১, ২১ মে ২০২৩

আপডেট: ১২:২৮, ২১ মে ২০২৩

বিয়ন্সের ওয়ার্ল্ড ট্যুরে কেন উদ্বিগ্ন পরিবেশবাদীরা

ছবি: সংগৃহীত

একক অ্যালবাম ‘রেনেসাঁ’ নিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্যুরে বের হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পপ তারকা বিয়ন্সে। যুক্তরাজ্যের কার্ডিফে কনসার্টে গানে তুলেছেন ঝড়ও। তবে ‘শো’কে কেন্দ্র করে গাড়ি ও সংগীত সরঞ্জামের যে বহর বিয়ন্সের সঙ্গে ছিল, আর যে পরিমাণ দর্শক সমাগম হয়েছিল, তাতে পরিবেশের ওপরে যে প্রভাব পড়েছে, তা ভাবাচ্ছে অনেককে। বিয়ন্সের মতো তারকাদের এমন ‘ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ পরিবেশবাদীদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। খবর বিবিসির।

গত বুধবার ৬০ হাজার মানুষ কার্ডিফে জড়ো হন বিয়ন্সের গান শুনতে কিংবা শিল্পীকে এক পলক দেখতে। তারা এসেছিলেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে।

ওইদিন স্থানীয় সময় বেলা ৩টায় জেটে করে গ্র্যামিজয়ী এই তারকা কার্ডিফ বিমানবন্দরে পৌঁছেছিলেন। কনসার্ট শেষে রাত ১১টায় তিনি ফিরেও যান লন্ডনে। কিন্তু শোয়ের আগে থেকে কনসার্টস্থল কার্ডিফ সিটি স্টেডিয়ামের বাইরে ৬০টি ট্রাক ও ১৮টি বড় গাড়ি সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এর আগেও ২০১৬ সালে ‘ফর্মেশন ট্যুরে’ সাতটি কার্গো বিমান ও ৭০টি ট্রাকে করে বিয়ন্সের কনসার্টের স্টেজ সেট এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ভেন্যুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যে বহরে বিয়ন্সে নিজে, স্টেজের অভিনয় শিল্পী এবং গানের নেপথ্য শিল্পীরা ছিলেন না। তাদের জন্য আলাদা বিমান ও গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিলন।

কার্ডিফ সিটি স্টেডিয়ামের বাইরের পরিস্থিতি দেখে টুইটারে একজন লিখেছেন, আমি উদ্বিগ্ন। স্টেডিয়ামের বাইরে যা যা পার্ক করা দেখলাম, এত ট্রাক, গাড়ি, কেবল একরাতের জন্য! এসব পরিবেশের জন্য ভালো নয়।

টুইটের উত্তরে স্থানীয় সাংবাদিক ইমন ফোর্ড লেখেন, বিয়ন্সের মতো তারকাকে শো করতে গেলে প্রচুর কর্মীর প্রয়োজন হয়। ওই টিমে গান তো বটেই, নাচের শিল্পীরাও থাকেন। তাদের নিয়েই চলতে হয় তারকাকে। আর শো সফল করতে স্টেজ সাজাতে হয় নানাভাবে। লোকজন তো আছেই, সেইসঙ্গে লাইট, মিউজিকের সরঞ্জামসহ প্রচুর জিনিসপত্রের প্রয়োজন হয়। তারপর সেখানে দর্শনার্থীরা যোগ হন। হ্যাঁ, তাতে পরিবেশের ওপরে প্রভাব তো পড়েই। এড়ানো যাবে না আপনার এই অভিযোগ বা পর্যবেক্ষণ।

সাংবাদিক ফোর্ডও মনে করেন, সত্যিকারের পরিবর্তন সুপারস্টারদের কাছ থেকে আসার সম্ভাবনা কম। তিনি লিখেন, টুইটারে এই যে তার (বিয়ন্সে) কনসার্ট নিয়ে এত লেখালেখি বা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, এসবের নিয়ে তিনি কিছু জানতে পারলেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাবেন না। কারণ বিয়ন্সে জানেন, দুনিয়ার কোথাও তার শো কেউ বয়কট করবে না।

বিয়ন্সের অন্ধ ভক্তরা ব্যাপারটি কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নও এসেছে অনেকের মনে। সাংবাদিক ফোর্ড বিবিসিকে বলেন, নামকরা এমন একজন শিল্পীর কথা বলা হচ্ছে যে, তিনি চাইলেই তার কনসার্টকে সাধ্যের সর্বোচ্চ আড়ম্বরে সাজাতে পারেন। আমি জানি অনেক অনুরাগীই হয়তো বলবেন যে তারা আশা করছেন, শো পরিবেশবান্ধব হবে। আবার তারা এটিও মনে করেন, আগামী পাঁচ বা ১০ বছরের মধ্যে বিয়ন্সেকে এভাবে দেখার সুযোগ নাও মিলতে পারে। তাই ভক্ত-অনুরাগীরা মূলত জাঁকজমক শোই আশা করে থাকেন। তারা তাদের জলবায়ু নিয়ে নীতিবোধ ও চিন্তাভাবনাকে একপাশে সরিয়ে রেখে তবে কনসার্টে এসেছেন।

গত দেড় দশক ধরে দাতব্য সংস্থা ‘জুলি’স বাইসাইকেল’ জলবায়ু এবং পরিবেশগত সংকটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে শিল্পকে একত্রিত করার জন্য কাজ করে চলেছে। এই সংস্থার সংগীত বিভাগের প্রধান চিয়ারা বাদিয়ালি বিবিসিকে বলেন, আমরা জানি যে আমাদের একটি জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত বিশ্বে যেতে হবে এবং সেই প্রেক্ষাপটে ভ্রমণ পদ্ধতিকে পুনর্বিবেচনা করা দরকার এবং স্টেজ শো ও কনসার্টের মতো সংগীত শিল্পের নানা মাধ্যমের মুখোমুখি হওয়া কঠিন চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেন, যে কোনো কিছুর পরিবেশগত প্রভাবের ৮০ শতাংশই নকশা পর্যায়ে আটকে থাকে, এটিই বাস্তবতা।

চিয়ারা বাদিয়ালি বলছেন, তিনি বিশ্বাস করেন তারকারা যে কোনো নেতিবাচক বিষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেন, পরিস্থিতির বদল ঘটাতে ভূমিকাও রাখতে পারেন। জনপ্রিয়তাও তাদের সেই শক্তি জোগায়।

সূত্র : বিবিসি। 

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়