বিসিবি লোগো
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন আগামী ৬ অক্টোবর। নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে বিতর্ক ততই বাড়ছে। এরইমধ্যে নির্বাচনে সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পাল্টা অভিযোগে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন তামিমকে সামনে রেখে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন বিসিবি নির্বাচন নিয়ে ক্রমেই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকেই অভিযোগ উঠছে অনিয়ম, পক্ষপাত এবং স্বার্থের দ্বন্দ্ব (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) নিয়ে।
বোর্ডের বর্তমান সভাপতির মনোনয়নে বিসিবির বেতনভুক্ত কয়েকজন কর্মকর্তা আছেন ভোটারদের তালিকাতে। আব্দুর রাজ্জাক, হাসিবুল হোসেন শান্ত, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার, গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর মতো অনেকেই আছেন তালিকাতে। প্রশ্ন উঠেছে বিসিবির কর্মচারী/কর্মকর্তারা কীভাবে ভোটার হন?
এছাড়া বিস্ময়কর ভাবে আরও অনেকেই আছেন এ তালিকাতে! টাঙ্গাইল থেকে এমন একজনকে ভোটার করা হয়েছে, যিনি আগে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন। কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট অভিযোগে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিলো।
আবার ভোলা থেকে ভোটার হয়েছেন ওয়েস্টিন হোটেলের সিইও সাখাওয়াত হোসেন, যিনি বর্তমান সভাপতির আরেক উপদেষ্টা। এছাড়া নির্বাচনের খসড়া তালিকা প্রকাশের একদিন আগেও ১৪টি ক্লাবকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা বলা হলেও, হঠাৎ করেই সেগুলোকে বাদ দেয়া হয়। এতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন বর্তমান মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। পাশাপাশি ছয় জেলার প্রতিনিধির নামও নেই।
শুধু এই কয়েকটিই নামই নয়, বিস্ময়কর ভাবে আরও কিছু নাম ঢুকেছে ভোটার তালিকাতে! এসব সিদ্ধান্ত প্রশ্ন তুলেছে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে।
আরও পড়ুন<<>>ভারতের বিপক্ষে জেতা সম্ভব, বলছেন বাংলাদেশ কোচ
সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পদ-পদবির লোভে নানা পক্ষ বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিচ্ছেন। প্রশ্ন উঠছে বিসিবির নির্বাচনে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ নতুন কোনো বিপদে ফেলবে কিনা বাংলাদেশকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী সদস্য দেশগুলোর বোর্ডে সরাসরি সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কিন্তু সরকারের হস্তক্ষেপ হওয়ায় এর আগে জিম্বাবুয়ে, শ্রীলংকা, নেপালকে সাময়িক নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি।
বাংলাদেশও সেদিকে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। আইসিসির ২.৪.৩ ধারায় বলা আছে, নিজেদের ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক শরীফুল আলম অভিযোগ করে বলেন, আমিনুল ইসলাম বুলবুল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মনোনীত সভাপতি প্রার্থী। আমিনুলের নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় হেন কোনো অসৎ উপায় নেই যা করছে না ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিশেষ সহকারী মো. সাইফুল ইসলাম মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছেন।
এমন অভিযোগ নিয়ে আগামী ৬ অক্টোবর রাজধানীর অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিসিবি নির্বাচন। শেষ পর্যন্ত কেমন নির্বাচন তা দেখার অপেক্ষা দেশের ক্রিকেট প্রেমীরা।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































