Apan Desh | আপন দেশ

টানা ৩ জুমা না পড়লে যে পরিণতি

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

টানা ৩ জুমা না পড়লে যে পরিণতি

ফাইল ছবি

সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে সপ্তাহের সেরা দিন জুমাবার। এ দিনকে আল্লাহ তাআলা সব দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে এ দিনের বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারিমে এ দিনের নামাজ পড়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু কেউ যদি টানা তিন জুমা না পড়ে তবে তার পরিণতি কী হবে?

জুমার নামাজ পড়া সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা এভাবে ঘোষণা দেন- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহবান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা : আয়াত ৯)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। (ইবনে মাজাহ ১০৯৮)

টানা তিন জুমা না পড়ার ক্ষতি
হাদিসে পাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত পর পর তিন জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর এঁটে দেন। (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

এরপর তারা (জুমা ত্যাগকারীরা) আত্মভোলা হয়ে যাবে। অতঃপর সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)

এছাড়া মুসলিমদের অন্যতম একটি নিদর্শন হলো সময়মতো নামাজ পড়া। তাইতো হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, নামাজ ত্যাগকারী নির্ঘাত কাফের (বায়হাকি: ১৫৫৯, ৬২৯১)

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে নামাজ পড়ে না সে কাফের (বায়হাকি: ৬২৯১)
নামাজ পরিত্যাগকারীর ব্যাপারে কোরআন-সুন্নাহর দলিলগুলো প্রমাণ করে, বে-নামাজি ব্যক্তি ইসলাম নষ্টকারী বড় কুফরিতে লিপ্ত। তাই জুমা ও যেকোনো ওয়াক্তের ফরজ নামাজের প্রতি গুরুত্ব দেয়া জরুরি।

আরও পড়ুন<<>>গুনাহ মাফের দোয়া 

পক্ষান্তরে কোরআন-সুন্নায় জুমার অনেক ফজিলত ও মর্যাদার কথা বর্ণিত হয়েছে। জুমার দিনের অনেক আমলের কথা বিভিন্ন হাদিসে চমৎকারভাবে আলোচিত হয়েছে। 

হাদিসে পাকে এসেছে-হজরত আউস ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে (জুমার নামাজের পূর্বে স্ত্রী-সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে। (আবু দাউদ ৩৪৫)

ফজিলতের পাশাপাশি জুমার নামাজ অনাদায়ে হাদিসে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। কেউ টানা তিন জুমা আদায় না করলে তার জন্য সতর্কবাণী উল্লেখ করেছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

যারা জুমা থেকে মুক্ত
তবে অপর এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ছাড়া জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ। চার শ্রেণির লোক হলো- ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ)

আল্লাহ তাআলা মুলিম উম্মাহকে জুমার নামাজ পরিত্যাগ করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করে গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত ও মর্যাদার অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়