
ফাইল ছবি
নানা অসুস্থতায় রক্তের প্রয়োজন হয়। রক্ত দেয়া একটি মানবিক কাজ। সওয়াবের কাজ। শরীরের জন্য উপকারীও বটে। এতে মানুষের শরীরেরও অনেক উপকার সাধিত হয়। কিন্তু কখনও যদি মুসলমানের রক্ত না পাওয়া যায়, অমুসলিমের রক্ত গ্রহণ করা যাবে?
এমন প্রশ্নের উত্তর হলো জরুরি অবস্থায় অমুসলিমের রক্ত কোনো মুসলমানের দেহে প্রবেশ করানোতে ইসলামে বাধা নেই। একইভাবে কোনো অমুসলিমকে রক্ত দেয়াও নিষিদ্ধ নয়।
অমুসলিম ব্যক্তিরা বিশ্বাসগত অপবিত্র হলেও শারীরিক দিক থেকে অপবিত্র নয়। আর অমুসলিমদের রক্ত দান করতে কোনো বাধা নেই; বরং মানুষ হিসেবে মুসলিম-অমুসলিম তথা সব মানুষের প্রতি উদার মনোভাব ইসলামের শিক্ষা।
এটাই মূল কথা যে মুসলিম আর অমুসলিমের রক্তে কোনো প্রভেদ নেই। তবে রক্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মুসলিম কাউকে পাওয়া গেলে তার রক্ত নেয়া উত্তম।
আরও পড়ুন<<>>বিশ্বনবীর (সা:) আগমন, অন্ধকারে আলোর ঝলকানি
মুফতি শফি রহ. বলেন, রক্ত মানবদেহের অংশবিশেষ। দেহ থেকে নির্গত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নাপাক হয়ে যায়। আর নাপাক বস্তুর ব্যবহার নিষিদ্ধ। এ কারণে এবং সৃষ্টির সেরা জীব মানব অঙ্গের মর্যাদার কথা বিবেচনা করে স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তদান নিষিদ্ধ হওয়ার কথা।
তবে অস্বাভাবিক অবস্থায় বিশেষত চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইসলাম যেহেতু কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করেছে, তাই বিশেষ বিবেচনায় রক্তদানকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর কারণ হলো, রক্তের দেহান্তর ও অঙ্গান্তরে কোনো রকম কাটা-ছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না; বরং ইনজেকশনের মাধ্যমে খুব সহজেই তা দেহ থেকে দেহে স্থানান্তর করা যায়। যেভাবে কাটা-ছেঁড়া ছাড়া মায়ের দুধ শিশুর দেহে স্থানান্তরিত হয়ে শিশুর দৈহিক বিকাশে অসাধারণ ভূমিকা রাখে।
আর শিশুকে দুগ্ধপান করানো শুধু বৈধ নয়; বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যকীয়ও বটে। তা ছাড়া রক্তদান করলেও প্রাকৃতিকভাবে দেহের মধ্যে নতুন রক্তের সঞ্চার করে থাকে। অতএব যখন কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতে, অন্যের রক্ত ছাড়া রুগ্ণ ব্যক্তির জীবন-মরণ সংকট সৃষ্টি হয়, সে ক্ষেত্রে তাকে রক্তদান করা বৈধ। তবে রক্ত বিক্রি করা কোনো অবস্থায়ই বৈধ নয়।
(ফিকহুল বুয়ু : ১/৩০৮; জাওয়াহিরুল ফিকহ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৪০)
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।