Apan Desh | আপন দেশ

এবার নিবন্ধন হারালো আ.লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:০২, ১২ মে ২০২৫

আপডেট: ২২:২৫, ১২ মে ২০২৫

এবার নিবন্ধন হারালো আ.লীগ

ছবি: আপন দেশ

টানা ১৬ বছর দেশ শাসন করে স্বৈরশাসকের খেতাব পেয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী তিনি। গুম, খুন, লুটপাট, অর্থপাচারসহ অন্যায়ের রকমফের সবই করেছেন তিনি ও তার দলীয় নেতাকর্মীরা।

জুলাইয়ের গণঅভূত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন দলীয় নেত্রী। বছর না ঘুরতেই দলটির কর্মকাণ্ড স্থগিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আর ৪৮ ঘণ্টার মাথায় স্থগিত হলো দলটির নিবন্ধন। রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, বাংলাদেশের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের এ দশার জন্য দায়ী শুধু শেখ হাসিনাই। 

রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপনের পর এবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (১২ মে) রাত সোয়া ৯টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ সংগঠন ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। তার ধারাবাহিকতায় ইলেকশন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা গেজেট নোটিফিকেশন জারি করেছি। আপনারা গেজেটের কপি বিজি প্রেস থেকে পেয়ে যাবেন।

কোন গ্রাউন্ডে এই নিবন্ধন স্থগিত করা হলো জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটা করেছি।

এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের কক্ষে এ সংক্রান্ত বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুরে আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার যুক্তিসঙ্গতভাবে মনে করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৮(১) অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা দরকার।

আরওপড়ুন<<>>আ.লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি

এতে আরও বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের ওপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।

এতে উল্লেখ করা হয়,​ সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে- আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশে সন্ত্রাসী সংগঠনের মতো বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। 

যেহেতু সরকার যুক্তিসংগতভাবে মনে করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা-১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেআওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের ‍বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত।

এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়