Apan Desh | আপন দেশ

গাজায় নৃশংস গণহত্যায় মেতেছে ইসরায়েল, নিহত আরও ৮১ ফিলিস্তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ২৯ জুন ২০২৫

আপডেট: ১২:০১, ২৯ জুন ২০২৫

গাজায় নৃশংস গণহত্যায় মেতেছে ইসরায়েল, নিহত আরও ৮১ ফিলিস্তিনি

ফাইল ছবি

অবরুদ্ধ গাজায় নিরস্ত্র-নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ২৪ ঘন্টায় দখলদার বাহিনীর নৃশংস হামলায় আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক মানুষ। শনিবার দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। 

আল-শিফা হাসপাতালের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাজা শহরের একটি স্টেডিয়ামের কাছে হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। স্টেডিয়ামটি তাঁবুতে বসবাসকারী বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।

বিবিসি যাচাইকৃত ফুটেজে দেখা গেছে, মানুষ খালি হাতে ও কোদাল দিয়ে বালু খুঁড়ে লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তারা বসে ছিলেন। একটি রাস্তায় হামলা হওয়ার পর হঠাৎ বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন।

আহমেদ কিশাউই নামে এ ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এ এলাকাটি তাঁবুতে পরিপূর্ণ ছিল– এখন তাঁবুগুলো বালুর নিচে। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা খালি হাতে খুঁড়েছি।

তিনি বলেন, এখানে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যাকে খোঁজা হচ্ছে, বা তাদের (ইসরায়েলিদের) দাবি অনুযায়ী কোনো সন্ত্রাসীও নেই এখানে। কেবল বেসামরিক বাসিন্দা, শিশু, যাদেরকে কোনো দয়া না দেখিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক এবং একটি তাঁবুতে হামলায় আরও ১৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও ছিল। আত্মীয়রা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, আল-মাওয়াসিতে হামলায় তিনটি শিশু এবং তাদের বাবা-মা নিহত হয়েছেন, যারা ঘুমের মধ্যেই মারা যান।

শিশুদের দাদি সুয়াদ আবু তেইমা বলেন, এ শিশুরা তাদের কী ক্ষতি করেছিল? তাদের দোষ কী?

শনিবার বিকেলে জাফা স্কুলের কাছে তুফফাহ মহল্লায় একটি বিমান হামলার পর আরও মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে শত শত বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী আশ্রয় নিয়েছিল।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ হামলায় পাঁচ শিশুসহ অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ হাবুব রয়টার্সকে বলেন, হামলায় তার ভাগ্নে, বাবা এবং প্রতিবেশীদের সন্তানরা নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা তাদের কোনো ক্ষতি করিনি, তারা কেন আমাদের ক্ষতি করছে? আমরা কি তাদের ক্ষতি করেছি? আমরা বেসামরিক নাগরিক।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় চলাচল অসম্ভব হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকে পড়া অনেক হতাহতের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।

গত মার্চ মাসে ইসরায়েল গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করলে দুই মাসের একটি যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে। ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি তিনটি ধাপে বিভক্ত ছিল, কিন্তু তা প্রথম ধাপের পর আর এগোয়নি।

দ্বিতীয় ধাপের অন্তর্ভুক্ত ছিল একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা। ইসরায়েলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে গাজায় থাকা বাকি জীবিত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার।

বৃহস্পতিবার হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় একটি নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির জন্য তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা স্থবির হয়ে আছে।

গাজায় হামাসের হাতে আটক বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে একটি চুক্তির জন্য শনিবার সন্ধ্যায় তেলআবিবে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা বলেন, যুদ্ধ শেষ করে এক দফাতেই সবাইকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়