Apan Desh | আপন দেশ

পাবনায় ঈদের রাতে চেয়ারম্যানের গোডাউনে ৬৫ বস্তা চাল জব্ধ

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ১৭ জুন ২০২৪

আপডেট: ১৭:৪৭, ১৭ জুন ২০২৪

পাবনায় ঈদের রাতে চেয়ারম্যানের গোডাউনে ৬৫ বস্তা চাল জব্ধ

ফাইল ছবি, ইনসেটে চেয়ারম্যান মশিউর রহমান

ঈদের আগে গরীবের জন্য বরাদ্দের ৬৫ বস্তা চাল উঠেছে চেয়ারম্যানের গোডাউনে। তবে গভীর রাতে হাতেনাতে ধরা পড়েছেউপজেলা প্রশাসনের কাছে। চালগুলো জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে বিতরণ না করে চালগুলো আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনা পাবনা জেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের মশিউর রহমান।

রোববার (১৬ জুন) দিবাগত রাত ২ টার দিকে গোডাউন পরিদর্শন করে এ তথ্য জানান সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয়  সূত্র বলছে, এ ইউনিয়নে ২৩শ কার্ডে দুস্থদের খাদ্য সহায়তার (ভিজিএফ) চাউল বরাদ্দ রয়েছে। যেটি গত বৃহস্পতিবার থেকে বিতরণ শুরু করে ঈদের আগে বিতরণ সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু সেগুলো সম্পূর্ণরুপে বিতরণ না করে ইউনিয়নের বোয়ারিয়া বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের ব্যক্তিগত গোডাউনে মজুত রাখা হয়।

রোববার (১৬জুন) সন্ধ্যা থেকে প্রতি ভ্যানে ৭/৮ বস্তা করে চাউল বিভিন্ন জায়গায় যেতে লক্ষ্য করে স্থানীয়রা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গোডাউনের পাশে লোকজন জড়ো হতে থাকলে চেয়ারম্যানের আজ্ঞাবহ ব্যক্তিরা গোডাউন আটকে সটকে পড়েন। এধরণের অভিযোগ পেয়ে রাত ২টার দিকে ইউএনও ওই গোডাউন পরিদর্শনে গিয়ে ৬৫ বস্তা চাউল জব্দ করেন।

এ ব্যাপারে ইউএনও বলেন, আপাতত ৬৫ বস্তা চাউল গোডাউনে পেয়েছি। যেটি ঈদের আগেই বিতরণ শেষ হবার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যান বলছেন অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় দেড়শো সুবিধাভোগী চাউল নিতে আসেন নাই। সেগুলো উনি গোডাউনে রেখেছেন। যেগুলো বিতরণে কথা বলা হচ্ছে সেগুলো ঠিকঠাক বিতরণ হয়েছে কি না সেটি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।

আরও পড়ুন<<>> ‘পাবনায় মরেও শান্তি নেই’

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, রোববার সন্ধ্যা থেকে ভ্যানে করে ৩০ কেজি বস্তার ভিজিএফ এর চাউল গোডাউন থেকে বের হচ্ছে। তখন আনুমানিক দেড় থেকে ২শ বস্তার মত চাউল ছিল। এভাবেই দুস্থদের চাউল নিয়মের বাইরে তার ব্যক্তিগত লোকদের দেয়া হয় এবং পরে সেগুলো তারা ৭/৮শ টাকা বস্তা দরে বিক্রি করেন। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হন। এ ধরণের অনিয়মের বিচার হওয়া উচিত।

বোয়ারিয়া বাজার এলাকার এক ভ্যানচালক বলেন, সব ইউনিয়নে ঈদের আগে চাউল দিয়েছে। অথচ এখানে গরীবের বাড়ি না গিয়ে চাউল চেয়ারম্যানের গোডাউনে। এটি অবশ্যই আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন। এভাবেই সব আত্মসাৎ হয়ে যাচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে দুস্থ ও গরীবরা।

এদিকে আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন চেয়ারম্যান মশিউর রহমান। তিনি বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় দেড়শো লোক চাউল নিতে আসেনি। বাধ্য হয়ে তাদের চাউল গোডাউনে রাখা হয়েছে। ঈদের পরে সুবিধাভোগীদের ডেকে বিতরণ করা হবে। তাছাড়া এটি ব্যক্তিগত গোডাউন নয়, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য অনুমোদিত গোডাউন।

ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, ওই ৬৫ বস্তা চাউল জব্দ করে ইউপি সচিব, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রেখে আসা হয়েছে। এতোগুলো চাউল বিতরণ হয়নি অথচ উনি (চেয়ারম্যান) সংশ্লিষ্ট কাউকেই জানাননি। এখানে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। এছাড়া আত্মসাতের অভিযোগসহ অন্যান্য সকল বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপন দেশ/এন/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ
SS Power

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়