তারেক রহমান।
বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। এখন সময় এসেছে মানুষের কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার। এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা হবে যেখানে দেশের প্রতিটি মানুষ নির্ভয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে পারবে। এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ৩০০ ফিট সড়কের গণসংবর্ধনা মঞ্চে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন>>>সমাবেশস্থলে তারেক রহমান, নেতাকর্মীদের উপচে পড়া ভিড়
তারেক রহমান বলেন, সবাই মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব আমরা, যা একজন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশে একজন মানুষ নিরাপদে ঘর থেকে বের হতে পারে ও ঘরে ফিরে আসতে পারে। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল। আজ আমাদের সময় এসেছে সবাই মিলে দেশ গড়ার।
তিনি বলেন, আই হ্যাভ আ প্লান। সে প্ল্যানটা হলো বাংলাদেশকে নিয়ে, বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
তারেক রহমান বলেন, এ দেশের মানুষ যদি আমাদের পাশে থাকে, আল্লাহর রহমত যদি আমাদের সঙ্গে থাকে তাহলে আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।
তিনি বলেন, আমরা রাসুল (সা.)-এর ন্যায়পরায়ণতায় আমরা দেশ পরিচালনা করার চেষ্টা করব। এ সময় নিজের মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষ দল-মত-নির্বিশেষে এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্ভভৌমত্ব রক্ষা করেছে।
তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখেছি আমাদের তরুণরা ২৪-এর আগস্টে এ দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে কিভাবে আন্দোলন করেছে আমরা দেখেছি। ৭১-এ যারা শহীদ হয়েছেন, ২৪-এর আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে তাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
শহীদ ওসমান হাদিকে স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে ২৪-এর আন্দোলনের এক সাহসী তরুণ ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। ওসমান হাদী শহীদ হয়েছেন। ওসমান হাদী চেয়েছিল এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক। তিনি চেয়েছিলেন এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক। এ দেশের মানুষ নিজেদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক। ওসমান হাদীসহ এইআন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, এ মানুষগুলোর রক্তের ঋণ যদি শোধ করতে হয় আসুন আমরা আমাদের সে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলি— যেখানে আমরা সবাই মিলে কাজ করবো, যেখানে আমরা সকলে মিলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
তিনি বলেন, রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে আজ আমি আমার প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছি। আপনাদের দোয়ায় আজ আমি আপনাদের মাঝে। প্রিয় ভাই-বোনেরা, আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমি ১৯৭১ সালে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর আধিপত্যবাদী হাত থেকে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে এ দেশ রক্ষা করা হয়েছিল। একইভাবে পরবর্তী সময়ে সব স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এ দেশের জনগণ, এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ তাদের গণতন্ত্রের অধিকারকে ছিনিয়ে এনেছিল। কিন্তু তারপরেও ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি ১৯৭১ সালে দেশের মানুষ যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ২০২৪ সালে এ দেশের ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষ; কৃষক-শ্রমিক, গৃহবধূ, নারী-পুরুষ, মাদ্রাসার ছাত্রসহ দল-মত ও শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সব মানুষ গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এ দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছে।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে চায়, তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ চায় তারা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার পাবে।
তিনি আরও বলেন, এদেশে যেমন পাহাড়ের মানুষ আছে, এদেশে সমতলের মানুষ আছে। এদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে। আমরা চাই সকলে মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন। একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশে একজন নারী, একজন পুরুষ, একজন শিশু নিরাপদে ঘর থেকে বের হয়ে আবার নিরাপদে ঘরে ফিরে আসতে পারে।
এদিন, বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর ৩০০ ফিট সড়কের গণসংবর্ধনা মঞ্চে পৌঁছান তারেক রহমান। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































