
তারেক রহমান।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে শিক্ষক-কর্মচারীসহ সকল পেশাজীবীর সহযোগিতা চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে তিনি এ সহযোগিতা চান।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ উপলক্ষে একটি শিক্ষক মহাসমাবেশ আয়োজিত হয়। সেখানে তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপি একটি জ্ঞান ও মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সরকার গঠন করতে চায়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে শিক্ষকদের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, জাতি গঠনে আপনাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। একটি উন্নত দেশ গড়তে মেধাবী প্রজন্ম তৈরি করাই মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন>>>পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন যে তিন বিজ্ঞানী
তারেক রহমান ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার করেন। জনগণের ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে এ প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
১. শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করা হবে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে।
২. শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের লক্ষ্যে কাজ করা হবে। এ জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠনের অঙ্গীকার করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এ কমিশন জাতীয়করণের বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ও টেকসই রূপরেখা তৈরি করবে।
শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নের ওপর জোর দিয়ে তারেক রহমান বলেন, প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলাম ঢেলে সাজানোর জন্য ‘শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হবে। এ কমিশনের মাধ্যমে ব্যবহারিক ও কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, নৈতিকতা, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের আলোকে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন জরুরি। এটি না হলে প্রতিযোগিতার বিশ্বে জাতি হিসেবে টিকে থাকা কঠিন হবে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মর্যাদা নিয়ে তারেক রহমান বলেন, পারিবারিক গণ্ডি পেরোনোর পর শিক্ষকরাই শিক্ষার্থীদের রোল মডেল। কিন্তু শিক্ষকরা যদি সমাজে সম্মান নিয়ে টানা পোড়েনে থাকেন, তবে তাদের পক্ষে রোল মডেল হওয়া কঠিন। বিএনপি এমন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নে কাজ করছে। যাতে শিক্ষকরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেদের রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন। তাদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হবে। শিক্ষকতা পেশা কখনোই সাধারণ বা উপায়হীন বিকল্প হতে পারে না। বরং মেধাবী মানুষটি যেন প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নেন, সেভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, সমাজে দুর্নীতি একটি বড় ব্যাধি। তিনি বিশ্বাস করেন যে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষকরাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক বিপ্লব গড়ে তুলতে সবচেয়ে যোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেন। দুর্নীতিবাজরা বিত্তবান হলে সমাজের ভাবমূর্তি কমে, কিন্তু শিক্ষকদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকলে সমাজের ভাবমূর্তি বাড়ে।
শিক্ষকদের সম্মান বাড়ানোর জন্য তারেক রহমান আরেকটি পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ তালিকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের কমপক্ষে একজন করে শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো জরুরি। এর জন্য প্রয়োজনে ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্স (রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম) পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। শিক্ষার্থীরা যখন তাদের রোল মডেল শিক্ষকদের রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সম্মানিত হতে দেখবে, তা তাদের মনোজগতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখেন। তিনি নির্বাচন নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির সমালোচনা করেন। মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, আসন্ন নির্বাচনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, একটি পক্ষ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় তিনি শিক্ষকদের সজাগ থাকার আহবান জানান। তিনি শিক্ষকদের বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।