Apan Desh | আপন দেশ

শিবিরকে বোরকা-চুড়ি পরে রাজনীতি করার আহবান ছাত্রদল সভাপতির

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:০০, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিবিরকে বোরকা-চুড়ি পরে রাজনীতি করার আহবান ছাত্রদল সভাপতির

ছবি: সংগৃহীত

কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ছাত্রশিবির তাদের গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে অনেক কিছু বাস্তবায়ন করতে চায়। তারা বিগত সাড়ে ১৫ বছর গুপ্তরাজনীতি করেছে। এখনও যদি লজ্জা পায় নারীদের মতো, আমি তাদেরকে আহবান জানাই, তারা যেন বোরকা পরিহত হয় এবং চুড়ি পরে এ রাজনীতি করে। ছাত্ররাজনীতি করবে তারাই, যারা সাহসী, বিবেকবান।

বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান ফটকে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে আদালতে রিট আবেদনকারী ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকির প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

ক্যাম্পাসে, রাজপথে—যেখানেই ছাত্রশিবির গুপ্তরাজনীতি করবে, সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে বলেও মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি।

তিনি বলেন, তারা নাকি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। অথচ আমরা দেখেছি, সাড়ে ১৫ বছর আল্লাহ থেকেও তারা খুনি হাসিনাকে বেশি ভয় পেয়েছে। তারা খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পর্যন্ত সাহস রাখেনি। তারা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের পদ–পদবি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

রাকিবুল ইসলাম বলেন, পরিচয় গুপ্ত থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের ওই সব নেতার বিরুদ্ধে একটি জিডি পর্যন্তও হয়নি। তাই ক্যাম্পাসে, রাজপথে—যেখানেই তারা গুপ্তরাজনীতি করবে, সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে।

আরওপড়ুন<<>>‘অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ডাকসুতে বিজয়ী হবে ছাত্রদল’

এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া শিবিরের এক নেতা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে আমাদের এক বামপন্থী বোন একটি রিট দায়ের করেছিল। শুধু সে অপরাধে গুপ্ত সংগঠন ছাত্রশিবিরের একজন আমাদের সে সহযোদ্ধা বোনকে পদযাত্রা করে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছিল। তার প্রতিবাদ এবং সারাদেশে সব রাজনৈতিক নারী কর্মীদের অব্যাহতভাবে গুপ্ত সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাইবার বুলিং, দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের শারীরিকভাবে আঘাতের প্রতিবাদে আমাদের এ মানববন্ধন।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নারীদের ওপর সাইবার বুলিং, আক্রমণ, হেয় করা ও গণধর্ষণের হুমকি দেয়ার প্রতিটি ঘটনায় ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা জড়িত। বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিশেষ করে ভাইস চ্যান্সেলর এবং প্রক্টরের পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে গুপ্তরাজনীতি চলমান রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথায় গুপ্তরাজনীতি চলছে, কোথায় প্রকাশ্য রাজনীতি চলছে, এটি কেউ জানুক আর না জানুক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ঠিকই জানেন যে ছাত্রশিবির কোথায় কোথায় রাজনীতি করে।

ঢাবিতে যেন কোনো গুপ্তরাজনীতি না থাকে, সে ঘোষণা দিতে উপাচার্যের প্রতি দাবি জানান ছাত্রদলের এ নেতা। নাছির বলেন, এ ঘটনায় শাস্তির ব্যবস্থা না করেলে গুপ্ত সংগঠনের নেতা আলী হুসেন যেভাবে আমার বোনকে পদযাত্রা করে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছে, এমন রকম ঘটনা আরও ঘটতে থাকবে। কিন্তু যতই ঘটতে থাকবে ছাত্রশিবির গুপ্তরাজনীতি করার কারণে, তারা তাদের কমিটি প্রকাশ না করার কারণে, যখন প্রকাশিত হবে তারা তখন ঘোষণা দেবে যে সে ব্যক্তি তাদের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত না।

আরওপড়ুন<<>>নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: দুদু

তিনি বলেন, যে বোনের প্রতি পদযাত্রা করে গণধর্ষণের হুমকি দেয়া হয়েছিল, আমরা তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ঢাবির সব নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানাই, আগামী ০৯ তারিখ ডাকসু নির্বাচনে আপনারা গুপ্ত সংগঠন ছাত্রশিবিরের কোনো পর্যায়ের কোনো প্যানেলকে আপনারা নির্বাচিত করবেন না।

ছাত্রদল নেত্রী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুপন্তী রত্না বলেন, আমরা নারী শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চাই, কিন্তু গুপ্ত সংগঠনের ভয়ভীতি আমাদের প্রতিদিন পিছু টেনে ধরে। বাংলাদেশের মোট ভোটারের ৫২ শতাংশ নারী। অথচ রাজনীতিতে আমরা বারবার বাধার মুখে পড়ি। কারণ, যারা প্রকাশ্যে রাজনীতি করে না, তারা আড়ালে থেকে আমাদের হেয় করে, আমাদের গালাগালি করে, আমাদের হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে এ গুপ্তরাজনীতি বন্ধ করার। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্র এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করতে হবে। অন্যথায় আমরা নারীরা নীরব থাকব না।

আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়