Apan Desh | আপন দেশ

নতুন চালে স্বস্তি ফিরছে, ডিম-সবজির বাজার চড়াই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:১৯, ৯ মে ২০২৫

আপডেট: ১৭:৫৫, ৯ মে ২০২৫

নতুন চালে স্বস্তি ফিরছে, ডিম-সবজির বাজার চড়াই

ছবি : আপন দেশ

দীর্ঘ দিন ধরে চালের বাজারে অস্বস্তি বিরাজ করছিল। ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির খবর হলো, সারা দেশে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে, বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন চাল। এতে দাম কমতে শুরু করেছে। গত দুই সপ্তাহে ধরনভেদে এ চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা কমেছে। তবে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। ব্রয়লার মুরগি ও পেঁয়াজের দাম বাড়তিই রয়েছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দামও কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া মাছ ও মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে। 

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (০৯ মে) রাজধানীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। চাল ব্যবসায়ীরা জানান, নুতন মিনিকেট আসায় বাজারে চালের দাম কমেছে। মিনিকেট হিসেবে পরিচিত ছাঁটাই করা চাল মূলত বোরো ধান থেকে তৈরি করা হয়। বর্তমানে এ ধানের মৌসুম।

রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানে ডায়মন্ড ও রশিদসহ কয়েকটি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৫ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও এ চালের কেজি ৮৮ থেকে ৯০ টাকার আশপাশে ছিল। অর্থাৎ কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা দাম কমেছে। সাগর মিনিকেটের দামও ৭৮ থেকে কমে ৭৫ টাকা হয়েছে। যদিও অনেক দোকানে গত মৌসুমের অর্থাৎ পুরানো মিনিকেট চাল এখনো রয়েছে। সেগুলোর দাম নতুন চালের চেয়ে কিছুটা বেশি।

পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। মাসখানেক আগেও পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আলু ২৫-৩০ টাকা, দেশি নতুন রসুন ১৪০-১৬০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকা, চিনি ১২০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০-১১৫ টাকা, দেশি চিকন মসুর ডাল ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন<<>> দেশি টাকায় টার্মিনাল, মালিকানা বিদেশি!

খুচরা পর্যায়ে কিছু সবজির দামও চড়া রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৭০-৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। প্রতিকেজি পটোল ৭০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৯০-১০০ টাকা, টমেটো মানভেদে ৪০-৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, দেশি শসা ৮০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা, লম্বা লাউ প্রতি পিস ৭০-৯০ টাকা, ঝিঙা প্রতিকেজি ৮০-১০০ টাকা, করলা প্রতিকেজি ৮০ টাকা, কচুরমুখি প্রতিকেজি ১০০-১২০ টাকা, প্রতিকেজি মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, সজনে ডাটা কেজি ১৫০-১৬০ টাকা। প্রতিকেজি চিচিঙা ৬০-৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি। এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও ধরনভেদে সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কম ছিল। এ ছাড়া ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা বেড়ে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা হয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানেই ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে। চড়া সবজির দামের কারণে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে ডিমের। যে কারণে দাম বাড়তে শুরু করেছে। রামপুরা বাজারের বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবজির দাম বেশি হওয়ার কারণে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। এর প্রভাবেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম বাড়িয়েছেন।

ক্রেতারা জানান, সস্তা প্রোটিনের উৎস হিসেবে পরিচিত ডিম ও মুরগির দাম বাড়লে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর এর চাপ তৈরি হয়। তার ওপর যখন বাজারে সবজি, চাল সবকিছুই উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্যের বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আল-আমিন বলেন, চাল, তেলের দাম আগে থেকেই বাড়তি। চড়া দামে কিনতে হচ্ছে সবজি। এর সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির মাংস ও ডিমের দাম বাড়তে শুরু করেছে। কোনো কিছুর দাম একবার বাড়তে শুরু করলে আর থামতে চায় না।

এদিকে মাছ ও মাংসের দাম অনেকটা আগের মতোই রয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস এক থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাছের মধ্যে প্রতি কেজি চাষের কই ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়