ছবি : আপন দেশ
ক্রমেই ভয়াবহ রুপ ধারণ করছিল চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় কারখানায় লাগা আগুন। তীব্র তাপের কারণে কাছাকাছি যেতে পারছিলেন না ফায়ার ফাইটাররা। পাশের একটি তিনতলা ভবনেও ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। অবশেষে ১৭ ঘন্টারও বেশি সময় পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগবে বলে জানান তারা। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের একজন কর্মকর্তা বলেন, সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আমাদের এখনো ১৭ ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে সময় লাগবে। আগুনের কারণ সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে ৮তলা ভবনের ৭ তলা ভবনের অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদাম আগুন লাগে। অ্যাডামস তোয়ালে, ক্যাপ এবং জিহং মেডিকেল সার্জিক্যাল গাউন তৈরির কারখানা। কারখানা ভবনটি সাততলার। দুটি কারখানার গুদামই সাততলায়, যেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সিইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও কারখানার মালিকপক্ষ জানায়, ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকে নেই। সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন<<>>চট্টগ্রাম ইপিজেডে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুন
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। সন্ধ্যার দিকে পুরো ভবনটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনে আশেপাশের কয়েকশো মিটার পর্যন্ত দূরে আগুনের তাপ অনুভূত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবি যোগ দেয়। কিন্তু আগুনের তীব্রতায় তারা একপ্রকার অসহায় হয়ে পড়ে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে দেখা যায়, আগুনের তাপের কারণে ভবনটির ১০০ মিটার পর্যন্ত কেউ যেতে পারছেন না। তাপের তীব্রতায় ভবনের ছাদ ধসে পড়ছে। এই ভবন থেকে আগুনের ফুলকি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আশপাশের ভবনে পানি ছিটিয়ে এ আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করার চেষ্টা করছেন। চারপাশে ভিড় করেছেন উৎসুক মানুষ। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের ভবনের পাশ থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। উদ্ধার সহায়তায় দুই প্লাটুন বিজিবিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, আগুনের তাপের কারণে কারখানাটির কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আগুন নেভানোর পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কাজ করছেন তারা। ভেতরে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে কারখানা দুটিতে আগুন লাগার পর আশপাশের কারখানাগুলোও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এ এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত ভবনটিতে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড এবং জিহং মেডিকেল কোম্পানি নামের দুটি প্রতিষ্ঠান আছে। ভবনটির আটতলা খালি। সাততলায় অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড এবং জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদাম। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। অ্যাডামস ক্যাপে টাওয়েল ও ক্যাপ এবং জিহং মেডিকেল সার্জিকেল গাউনসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরি করা হয়।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































