
সংগীত শিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল ও ধর্ষণ মামলার সেই বাদি
তারকা খ্যাতি কারো জন্যে আশির্বাদ হলেও অনেকের জন্য সেটি বিড়ম্বনারও। আবার কেউ খ্যাতির ভারে নিজেকে ডুবিয়ে দেন অন্ধকারে। ভারতের সংগীতভিত্তিক রিয়েলিটি শো 'সারেগামাপা' থেকে রাতারাতি তারকা বনে যান মাইনুল আহসান নোবেল। তারপর থেকেই একের পর এক বিতর্কে জড়ান এ সংগীত শিল্পী। বর্তমানে ধর্ষণের অভিযোগের এক মামলায় কারাগারে আছেন তিনি। আর সেখানেই ঘটেছে আরেক আলোচিত ঘটনা। ধর্ষণ মামলার বাদীকেই বিয়ে করলেন নোবেল।
ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা ইডেন মহিলা কলেজের সে ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের বিয়ে হয়েছে। ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বুধবার (১৮ জুন) ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে নোবেলের কাবিনমূলে বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার আসামি নোবেলের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে উভয়ের সম্মতি সাপেক্ষে এ বিয়ে সম্পাদন করে আদালতকে অবহিত করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দেয়া হয়। এ সময় ওই ছাত্রী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক ওই শিক্ষার্থী। মামলা দায়েরের পরই নোবেলকে ডেমরা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওইদিনই জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে মামলার অভিযোগে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী ইডেন কলেজের ছাত্রীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের ১২ নভেম্বর নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ওই ছাত্রীকে ডেমরা থানাধীন তার বাসায় নিয়ে যায়। এরপর কয়েকজন আসামির সহায়তায় আটকে রাখে। সেদিন রাত অনুমান ৮টার সময় ওই ছাত্রীর মোবাইল নিয়ে নেয়। সে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য নোবেলকে মোবাইল ফেরত দিতে বললে নোবেল ২৬ হাজার টাকার রেডমি-১০ প্রো মোবাইলটি ভেঙে ফেলে।
এরপর নোবেল তার বসতঘরে আটক রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং এর ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে। নোবেলের কথামতো বাসায় না থাকলে তার মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে মর্মে বলে জানায়। তাই বাদী আসামির ভয়ে কাউকে কোনও কিছু বলার সাহস পাননি।
এরপর আসামি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন তারিখ ও সময় বাদীকে মারধর করতো। আসামি তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনের সহায়তায় বাদীকে চুলের মুটি ধরে টানাহেচড়া করে অপর একটি কক্ষে আটক করে রাখে। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বাদীর বাবা-মা বাদীকে চিনতে পারে। এরপর বাদীর বাবা-মা তাকে খোঁজাখুজি করা অবস্থায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে গত ১৯ মে রাত সাড়ে ৯টায় নোবেলকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনাঢ ডেমরা থানায় অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।