Apan Desh | আপন দেশ

শীতের দাপটে আলু-পেঁয়াজের দামে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:১২, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১২:১৪, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

শীতের দাপটে আলু-পেঁয়াজের দামে স্বস্তি

ছবি : আপন দেশ

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় বেড়েছে শীতের দাপট। এখন চলছে শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম। বাজারে বেড়েছে শীতের সবজির সরবরাহ, ফলে কমছে দাম। এতে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। হঠাৎ বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। উল্লেযোগ্য হারে কমেছে ফার্মের ডিমের দাম। এছাড়া মুরগি, মাছ ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

এদিন সকালে কমলাপুর কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো নতুন সবজি। দাম নাগালের মধ্যে আসায় মানুষ কিনছেও বেশি। বিক্রেতা আরিফুল জানান, দাম যখন কম থাকে তখন ক্রেতা বেশি কেনে। সস্তার কারণে ক্রেতা বেশি কিনলে আমাদের বিক্রি ও লাভ বাড়ে।

দোকানগুলোতে শীতের সবজির বড় জায়গা জুড়ে থাকে বাঁধাকপি ও ফুলকপি। মাঝারি আকারের একেকটি বাঁধাকপি এখন বিক্রি হচ্ছে বাজার ও মানভেদে ২০-৩০ টাকার মধ্যে, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৩০ টাকা বা তারও বেশি। একইভাবে কমে এসেছে ফুলকপির দাম। আকার অনুযায়ী ২৫-৩৫ টাকার মধ্যে মিলছে ফুলকপি।

একই সঙ্গে কমে গেছে শিমের দাম। অন্তত তিন প্রকারের শিম পাওয়া যাচ্ছে ঢাকার বাজারগুলোতে। এগুলো এখন ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হয়। সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে নতুন আলুর। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ২০-২৫ টাকার মধ্যে। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা কমে বেগুনের দর নেমেছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। এদিকে পাকা টমেটোর দাম কমলেও এখনো গ্রাহকের নাগালে আসেনি। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। তবে শাকের দামও কমে গেছে। পালং শাক, লাল শাক, মুলা শাকের প্রতি আঁটি এখন বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকার মধ্যে।

তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সবজির দাম বেশি কমে গেলে কৃষক আবার ক্ষতির মুখে পড়েন। কারণ তাদের তখন উৎপাদন খরচেরও কমে বিক্রি করতে হয়। প্রতিবছরই মৌসুমের সময় কৃষকের উৎপাদিত পণ্যে দাম না পাওয়ার অভিযোগ পুরনো।

এদিকে আরও খানিকটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। মাস দুয়েক আলোচনায় থাকা পেঁয়াজের বাজার অনেকটা স্থির হয়ে আসছে। নতুন আসা মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধিতে দামও কমতে শুরু করেছে। বাজার ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। আর দেশি পুরনো পেঁয়াজ এখনো ১২০-১৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এর ফলে কমেছে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও। বড় আকারের ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগেও ১০০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। 

আরও পড়ুন<<>>সবজি বাজারে স্বস্তি, পেঁয়াজে অস্থিরতা কাটছেই না

পেঁয়াজের পাশাপাশি কমেছে আলুর দামও। বাজারে এখন পুরোনো আলুর সরবরাহ নেই। কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন আলুই বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের নতুন আলু বাজারে আসার পর এর কেজি ছিল ১০০ টাকার ওপরে। এখন সে দাম কমে ২০ থেকে ২৫ টাকা হয়েছে। গত এক সপ্তাহেই আলুর দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা কমেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এক কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহেও এমন দামেই মরিচ বিক্রি হয়েছিল, তবে এর আগে মরিচের কেজি ১০০ টাকার ওপর ছিল।

বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির বাজার স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬৫ টাকার মধ্যে। প্রতি ডজন ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ডিমের দাম তলানিতে নামায় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খামারিরা বলছেন, তাদের উৎপাদন খরচের নিচে ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে লোকসান বড় হয়ে এখন এটা খামার বন্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। 

এ অবস্থায় খামারিরা দাবি করছেন, ডিমের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার, ঠিক যেভাবে দাম বাড়লে সরকার সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। জানা গেছে, ঢাকার বাজারে সাদা রঙের ডিম এখন প্রতি ডজন ১০০-১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন ধরনের মাছ, গরুর মাংস, চালসহ বেশির ভাগ মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাছের বাজারে প্রতি কেজি চাষের তেলাপিয়া, পাঙাশ, কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার মধ্যে। আর রুই-কাতলার কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এ দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একই রকম রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়