
ছবি: আপন দেশ
নোয়াখালীর হাতিয়াতে ল্যাবে রোগী না দেয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ মো. মাহমুদুর রহমানের অফিসে ঢুকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে যুবদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত হাতিয়া পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক মোমিন উল্যা রাসেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা যুবদল।
সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন জেলা যুবদলের আহবায়ক মঞ্জুরুল আজিম সুমন।
এর আগে রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই চিকিৎসককে হেনস্তা করা হয়। সেদিন রাতে অভিযুক্ত যুবদল নেতাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় জেলা যুবদল।
ভুক্তভোগী চিকিৎসক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাতিয়া পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক মোমিন উল্যাহ রাসেলসহ কয়েকজন যৌথ মালিকানায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংলগ্ন ওছখালীতে হাতিয়া পপুলার ডায়াগনস্টিক নামে একটি ল্যাব পরিচালনা করে আসছে। রোববার ওই ল্যাবের পার্টনার রাফুল পার্শ্ববর্তী মেঘনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি ল্যাবে রোগী দেয়ায় ডা. শেখ মো.মাহমুদুর রহমানকে মুঠোফোনে কল দেয়। একপর্যায়ে রাফুল চিকিৎসক মাহমুদুর রহমানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেয়। তখন তিনি বলেন কিভাবে পোড়াবেন সামনে আসেন।
তাৎক্ষণিক বেলা পৌনে ১২টার দিকে যুবদল নেতা রাসেল ও রাফুলসহ তিনজন মারমুখী হয়ে ডা. শেখ মো.মাহমুদুর রহমানের অফিস কক্ষে ঢুকে পড়ে। পরবর্তীতে তার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। পুলিশের সামনে চিকিৎসক মাহমুদুর রহমানকে মারধর করতে উদ্যত হয়। ওই সময় হেনস্তার শিকার চিকিৎসক জীবন বাঁচাতে নিজের মুঠোফোনে ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ধারণ করে। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায় আমার জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই অবশ্যই আমি ভিডিও করব।
আরওপড়ুন<<>>ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা, সাবেক এমপি শিখরের ভাই গ্রেফতার
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়া পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক উল্যাহ রাসেল বলেন, ওখানে আমাকে অপমান-অপদস্ত করা হয়েছে। ডাক্তার মানছুর, রিয়াজ, ডিউটি ডাক্তার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মানসী রায় সরকারের থেকে বক্তব্য নেন। প্রত্যক্ষ পরোক্ষ ভাবে আমাকে ভিকটিম বানানো হয়েছে। উনারাই বলে দিবে ডাক্তার কি আচরণ করছে।
এদিকে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে হাতিয়া পপুলার ডায়গনস্টিকের পার্টনার নাজমুল হোসেন রাফুল বলেন, ডাক্তার মাহমুদুর রহমান অকারণে রোগীদের বিভিন্ন ল্যাব টেস্ট দিয়ে থাকেন। আল্ট্রা টেস্ট গুলো তার স্ত্রীকে দিতে বাধ্য করেন।
নোয়াখালী জেলা যুবদলের আহবায়ক মঞ্জুরুল আজিম সুমন আরও বলেন, একটি ভিডিও আমরা পেয়েছি, এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আরেক গ্রুপের বক্তব্য হচ্ছে এটা নিয়ে একটু তর্কবিতর্ক হইছে। আমরা তাকে কারণ দর্শনো নোটিশ দিয়েছি। নোটিশের জবাব দুদিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মানসী রানী সরকারের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ঘটনা কি ঘটেছে তা ভিডিওতে দেখেছেন। উনি ওনার সরকারি চেম্বারে বসে রোগী রেফার করেছে মেঘনা ডায়গনস্টিক সেন্টারে টেস্টের জন্য। পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে এসে বলেছে আপনি প্রতিটি রোগী পাঠান মেঘনা ডায়গনস্টিক সেন্টারে। পপুলারেও লিখতে পারেন, এটা নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়েছে।
চিকিৎসককে তার অফিসে ঢুকে হেনস্তা ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। পরে তিনি জানান, মানববন্ধন হচ্ছে। ওই ডাক্তার একাই মানববন্ধন করছেন।
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।