
ছবি : আপন দেশ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে ঘিরে দিনভর দফায় দফায় হামলা, সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল গোপালগঞ্জ শহর। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ কারফিউ বলবৎ থাকবে।
এর আগে গোপালগঞ্জ সদরে বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে কারফিউ জারি করে জেলা প্রশাসন। এদিন সন্ধ্যার পর থেকে শহরের কোথাও কোনো হামলা বা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা না ঘটলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তায় খুব একটা গাড়ি দেখা যায়নি। অফিসগামী মানুষ ছাড়া তেমন কেউ ঘর থেকে বেরও হয়নি। রাস্তায় কোথাও পুলিশ চোখে না পড়লেও কয়েকটি জায়গায় আনসার সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
এর আগে বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সমর্থকরা লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে বিভিন্ন রাস্তা ও গলিতে অবস্থান নেয়। এর ফলে র্যাব, সেনাবাহিনী এবং বিজিবি সদস্যরা শহরে তাদের টহল জোরদার করে।
বিজিবি সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ, র্যাব এবং সেনা সদস্যদের পাশাপাশি চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করেছে বিজিবি সদর দফতর।
উল্লেখ্য, এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) থেকেই গোপালগঞ্জ জেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলানো হয়। বুধবার সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
এসবের মধ্যে বেলা দেড়টার দিকে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে নেতারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেহাট হয়ে মাদারীপুর যাওয়ার পথে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের হামলা হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ পরিস্থিতিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে তারা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে পুলিশ সুপার কার্যালয় ছাড়েন। বুধবার দুপুরে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যায় কারফিউ জারির ঘোষণা আসে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।