
মিউনিখ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় চ্যাম্পিয়নস লিগের ট্রফি নিয়ে পিএসজি খেলোয়াড়দের উল্লাস
লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো বড় তারকাদের নিয়ে টমাস টুখেল যা করতে পারেননি, তারুণ্যেনির্ভর এক দল নিয়ে সেটা করে দেখালেন লুইস এনরিকে। স্প্যানিশ এ কোচের হাত ধরে মিউনিখে ইতিহাস গড়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। ইন্টার মিলানকে উড়িয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি জিতলো ফরাসি ক্লাবটি। শনিবার (৩১ মে) রাতে জার্মানির মিউনিখ শহরের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতালিয়ান জায়ান্ট ক্লাবটিকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা ঘরে তোলে পিএসজি।
ম্যাচের নায়ক ১৯ বছরের টিনেএজার দেজিরে দুয়ে। নিজে জোড়া গোলের পাশাপাশি করেছেন একটি অ্যাসিস্ট। একটি করে গোল আশরাফ হাকিমি, খিচা কাভারেস্কাইয়া আর সেনির। মৌসুম জুড়ে পিএসজির কান্ডারি হয়ে থাকা উসমান দেম্বেলে গোল পাননি, তবে অ্যাসিস্ট করেছেন দুটি।
২০১১ সালে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট প্রতিষ্ঠান কিনে নেয় পিএসজিকে। এরপর শুরু হয় মোটা অঙ্কের অর্থলগ্নি। চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে মেসি, নেইমার, এমবাপ্পে, রামোসদের মতো কিংবদন্তিদের কিনে তারা। কিন্তু শিরোপা আসেনি। ২০২০ সালে ফাইনাল খেলা দলটি অবশেষে লুইস এনরিকেকে কোচ করে তারণ্যের শক্তিতে পেল সাফল্য।
পিএসজি খেলোয়াড়দের গড় বয়স মাত্র ২৪ বছর। দলে কোন তারকা না থাকলেও ব্র্যাডলি বারকোলা, দেজিরে দুয়ে, খিচা কাভারেস্কাইয়াদের একসূতোয় গেঁথে স্বপ্নের শিরোপা এনে দিলেন এনরিকে।
স্বপ্নের শুরুই করেছিল পিএসজি। ১২তম মিনিটে আশরাফ হাকিমির গোলে এগিয়ে যায় তারা।ভিতিনিয়ার পাস ডি-বক্সে ধরে দেজিরে দুয়ে বাড়িয়েছিলেন আশরাফ হাকিমিকে। তিনি বল পেয়ে যান ছয় গজ বক্সে। তার সামনে, পেছনে কোনো ডিফেন্ডার ছিল না তখন। ফাঁকায় থাকা হাকিমি ঠান্ডা মাথায় বল জড়ান জালে।
২০২০-২১ মৌসুমে ইন্টার মিলানের হয়ে সিরি ‘এ’ জিতেছিলেন আশরাফ হাকিমি। গোলের পর তাই উদযাপন করেননি তিনি। উল্টো হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়েছেন ইন্টারের গ্যালারির দিকে তাকিয়ে।
একাদশ গড়ার আগে দেজিরে দুয়ে নাকি ব্যাডলি বারকোলা-এই দুজনের একজনকে বেছে নিতে হত এনরিকেকে। তিনি সঠিক খেলোয়াড়কেই নামিয়েছিলেন একাদশে। ২০তম মিনিটে পাল্টা আক্রমনে উসমান দেম্বেলের পাস থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দেজিরে । তার শট জালে জড়িয়েছিল ফেদেরিকো দিমাক্রোর গায়ে লেগে দিক বদলে। ১৯ বছর ৩৬২ দিন বয়সে তৃতীয় টিনএজার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে গোল করলেন তিনি। তার আগের দুজন প্যাত্রিক ক্লাইভার্ট ও কার্লোস আলবের্তো।
বিরতির আগে ৬০ শতাংশের বেশি বলের দখল রেখে পিএসজি পোস্টে ১৩টা শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে ৫টা। সেখানে ইন্টার মিলান কোন শটই রাখতে পারেনি লক্ষ্যে। কর্নার থেকে থুরামের হেড অল্পের জন্য যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে, তাদের সেরা সুযোগ ছিল সেটাই। আর বিরতির পর তো বিধ্বস্তই হয় ইন্টার।
৬৩ মিনিটে ভিতিনহার পাসে ব্যবধান ৩-০ করেন দেজিরি। আর ৭৩ মিনিটে দেম্বেলের থ্রু বলে পিএসজিকে ৪-০ গোলে এগিয়ে দেন খিচা কাভারেস্কাইয়া। ৮৬ মিনিটে ইন্টারের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেন সেনি।
অথচ এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে আটটি ম্যাচে পোস্ট অক্ষত রেখেছিল ইন্টার। ফাইনালের আগে সব মিলিয়ে হজম করেছিল মাত্র ১১ গোল। সে ইন্টারেকে নিয়ে ছেলেখেলা করল পিএসজি। তাতে একটা সময় ট্রেবলের স্বপ্ন দেখা দলটি মৌসুম শেষ করল খালি হাতে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।