
ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা। অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে তারা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন বন্দে ইসরায়েলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। কিন্তু বিশ্বনেতাদের যুদ্ধবিরতির আহবান উপেক্ষা করে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার বাহিনী। গত ২৪ ঘন্টায় হামলা চালিয়ে আরও ৮৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আল-আহলি স্টেডিয়াম গাজার বহু বাস্তুচ্যুত মানুষের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল, সেখানেই রক্তাক্ত গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা সিটি থেকে পালিয়ে আসা নাজওয়া নামের এক নারী আলজাজিরাকে বলেন, হাতে যা ছিল তাই নিয়ে বেরিয়েছি। আমাদের কিছুই বাকি নেই। আমরা আতঙ্কে আছি। যাতায়াত করাটাও ব্যয়বহুল। জিনিসপত্র আনার সামর্থ্য নেই।
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটিতে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং হাজারো মানুষকে পালাতে বাধ্য করছে। তবে দেশটির সেনাপ্রধান ইয়াল জামিরের দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
জামির আরও বলেন, গাজার বেশিরভাগ মানুষ ইতোমধ্যেই গাজা সিটি ছেড়ে চলে গেছে এবং সেনারা সেখানকার অভিযানে আরও অগ্রসর হবে।
আরও পড়ুন‘<<>>নোবেল পুরস্কার পেতে চাইলে গাজা যুদ্ধ বন্ধ করুন’
তবে জাতিসংঘের অনুসন্ধান কমিশন বলেছে, ইসরায়েলের কার্যক্রম আসলে গাজায় স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং পশ্চিম তীরে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৪১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, আরও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
এদিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গাজার যুদ্ধ ইসরায়েলবিরোধী তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, যারা শিশু হত্যা করে, মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে, তারা মানবতার যোগ্য নয়।
সিরিয়ার অন্তবর্তী প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহবান জানিয়ে বলেন, আমরা গাজার জনগণের সঙ্গে আছি। এ যুদ্ধ এখনই থামাতে হবে।
নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ আইদে আলজাজিরাকে বলেন, শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য নীরব আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। জুলাইয়ে ১৪২টি দেশ যে ‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’ সমর্থন করেছে, তার ভিত্তিতেই এ উদ্যোগ চলছে।
অন্যদিকে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ওয়াশিংটন ‘আশাবাদী, এমনকি আত্মবিশ্বাসী’ যে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অগ্রগতির ঘোষণা আসবে। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২১ দফা শান্তি পরিকল্পনা বিশ্বনেতাদের হাতে পৌঁছে গেছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।