প্রতীকী ছবি
পলাতক ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার সকল অপরাধে সঙ্গ দিয়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনকে বিতর্কিত করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বাগিয়ে নিয়েছিলেন সিনেমার নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা। হাসিনার দুঃশাসনে জনগণ যখন অতিষ্ঠ তখন রাষ্ট্রের টাকায় প্রাপ্ত পুরস্কারগুলোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ সিনেমাপাড়ার মানুষের মধ্যে। ফ্যাসিবাদের তোষামোদি করে স্বৈরাচার আমলে প্রাপ্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারগুলো বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সিনেমাপাড়ার ফ্যাসিবাদ বিরোধী নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
জনগণ ও বিরোধী মতের মানুষকে দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে দেশ যখন দুঃশাসনের যাঁতাকলে নিস্পেষিত, তখন এসব নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা সে দুঃশাসনে ঘি ঢেলে দিয়ে পতিত স্বৈরাচারকে উস্কে দিয়েছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাত করার জন্য শেখ হাসিনার পক্ষে এফডিসিতে মানববন্ধন পর্যন্ত করেছিলেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ব্যর্থ করে দিতে "আলো আসবেই" নামের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে সেখানেও নিয়মিত ছাত্র হত্যার উস্কানি দিতেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীদের একাংশ।
গোটা জাতির বিপক্ষে গিয়ে গুম, খুন ও আয়নাঘরের টর্চার সেলের নির্যাতনকারীদেরকে অকুণ্ঠ সমর্থন করে যাওয়া ফ্যাসিস্ট আমলের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারগুলো বাতিল করা না হলে জুলাই শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে বলে মনে করছেন সিনেমার ফ্যাসিবাদ বিরোধী নির্মাতা,শিল্পী ও কলাকুশলীরা। পতিত স্বৈরাচার আমলের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারগুলো বাতিল করে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন সিনেমাপাড়ার একাংশ।
আরওপড়ুন<<>>মৌসুমীসহ যেসব তারকার ব্যাংক হিসাব জব্দ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা এ প্রতিবেদককে বলেন, শেখ হাসিনা তার নিজের প্রয়োজনে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষদের ব্যবহার করেছিলো। আর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষরাও নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে হাসিনার নারকীয় দুঃশাসনে নির্লজ্জের মতো সঙ্গ দিয়ে গেছেন। হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ০৩ আগস্ট পর্যন্ত সরব ছিলেন সিনেমাপাড়ার মানুষরা।
ছাত্র আন্দোলনের সংহতি প্রকাশ করে সারাদেশের সর্বস্তরের মানুষ যখন হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে রাজপথে তখন ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ০৩ আগস্ট সকালে এফডিসি গেটে হাসিনার পক্ষে মানববন্ধন করেছিলেন চলচ্চিত্রের নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা। সিনেমার নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তোষামোদি, চাটুকারিতার মাধ্যমে অনুদান, চিকিৎসাভাতা, দুঃস্থ ভাতা ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বাগিয়ে নিয়ে এ অঙ্গনকে কলঙ্কিত করেছেন নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীদের সাইনবোর্ডে ফ্যাসিবাদের দালালরা।
এ বিষয়ে মেগাস্টারখ্যাত চিত্রনায়ক কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল বলেন, গোটা জাতির বিপক্ষে গিয়ে স্বৈরাচারের দালালি করে পাওয়া স্বৈরাচার আমলের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারগুলো বাতিল করা এখন সময়ের দাবি। এ দাবি শুধু সিনেমার মানুষদেরই নয়, এ দাবি গোটা দেশের সর্বস্তরের মানুষের।
তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদের দালালি করেও মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে এরা নিজেদের আখের গুছিয়ে সাধারণ মানুষের সামনে গোটা চলচ্চিত্র শিল্পকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। শুধু বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে আমাকে কোনো পুরস্কার দেয়া হয়নি। যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিভিন্ন পারপাস সার্ভ করেছে, তাদেরকেই জাতীয় পুরস্কার দেয়া হয়েছে। অনেক অযোগ্যদের জাতীয় পুরস্কার দিয়ে পুরস্কারকে বিতর্কিত করেছে পতিত স্বৈরাচার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
আপন দেশ/এমএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































