ছবি: আপন দেশ
‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস–২০২৫। দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষা ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন সাবেক শিক্ষককে সম্মাননা দিয়েছে রাবি প্রশাসন।
রোববার (০২ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্ত তিনজন হলেন—অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মু. আযহার উদ্-দীন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম নজরুল ইসলাম এবং ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুনুল কেরামত।
অধ্যাপক ড. মু. আযহার উদ্-দীন ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ এবং ১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাংকাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯৮ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন<<>> শিক্ষকতার উপরে কোনো পেশা নেই: রাবি উপাচার্য
অধ্যাপক ড. এম নজরুল ইসলাম ১৯৭২ সালে যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও ১৯৯৩ সালে ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছাড়াও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১০ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
অন্যদিকে, অধ্যাপক ড. মামুনুল কেরামত ১৯৯১ সালে ভারতের ইন্ডিয়ান স্কুল অব মাইনস থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও উপ-উপাচার্য ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১৯ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
সম্মাননা পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ড. আযহার উদ্-দীন বলেন,আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমার প্রিয় বিদ্যাপিঠ আজ আমাকে সম্মাননা দিয়েছে—এটি জীবনের এক গর্বের মুহূর্ত। ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিই। ১৯৬৯ সালের অক্টোবরে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য ইংল্যান্ডে যাই এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েও সেখানেই ছিলাম।
অধ্যাপক ড. এম নজরুল ইসলাম বলেন,ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালে এক শিক্ষক আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন—‘কি হতে চাও?’ আমি বলেছিলাম, ‘বিএ পাস করতে চাই।’ সেই শিক্ষকদের কেউ ম্যাট্রিক পাস, কেউ আইএ পাস ছিলেন, কিন্তু তারাই আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন আরও দূরে যেতে। আজ আমি তাঁদের স্মরণ করছি। তবে শিক্ষকের প্রকৃত গর্ব এখানেই নয়-শিক্ষার্থীরা কত দূর যেতে পেরেছে, সেটিই একজন শিক্ষকের সবচেয়ে বড় অর্জন।
অধ্যাপক ড. মামুনুল কেরামত বলেন, এ সম্মাননার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। আমার সঙ্গে শিক্ষকতা করা অনেক সহকর্মী আজ আমাদের মাঝে নেই—তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। সময়ের সঙ্গে শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে, শিক্ষার্থীরাও অনেক স্মার্ট হয়েছে। আমি মনে করি, শিক্ষকদেরও তাঁদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও স্মার্ট হতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রাধ্যক্ষ, বিভাগীয় সভাপতি, সাবেক শিক্ষক ও রাকসু প্রতিনিধিরা।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































