
ছবি: আপন দেশ
পাহাড়ি অধিবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়েছিলেন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এম এন লারমা)। তবে তিনি শুধু পাহাড়ের মানুষের নেতা ছিলেন না। তার সংগ্রাম ছিল দেশের সব নিপীড়িত মানুষের পক্ষে, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে। বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার আদর্শ এখনও প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙামাটি শহরের আশিকা কনভেনশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকীত উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, ৭২’র সংবিধান সংস্কারের প্রশ্নে বিপ্লবী লারমার গণপরিষদ বিতর্ক একটি অবশ্য পাঠ্য বিষয়। তিনি এমন একটি দেশের স্বপ্ন বুনেছিলেন যেখানে সকল শ্রেণি, সকল সম্প্রদায়, সকল জাতিগোষ্ঠী সমমর্যাদায় বসবাস করবে। সে লক্ষ্যে সংবিধানে কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোকপাত করেছিলেন। শুধু তাই নয়, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রবল জাত্যাভিমানী জাতীয়তাবাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মানবেন্দ্র লারমা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয় ও জাতীয়তার প্রশ্নে গণপরিষদের সংবিধান বিতর্কে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আরওপড়ুন<<>>‘ভারতের অনুরোধে ১২০০ টন ইলিশ পাঠানো হচ্ছে’
তারা আরও বলেন, উগ্র শাসকগোষ্ঠী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার প্রস্তাবিত যৌক্তিক সংশোধনী আমলে নেয়নি। অনেক সময় তুচ্চতাচ্ছিল্যে করে তাকে অপমানিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র রচনায় মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার গণপরিষদ ও পরবর্তী জাতীয় সংসদে প্রদত্ত সংশোধনী আমলে না নেয়ার কারণে আজকে দেশের এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
বক্তারা বলেন, এম এন লারমাকে জানা ও অধ্যয়ন করা খুবই জরুরি। তিনি কে? নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার সংগ্রাম জানা দরকার। তার সংসদীয় বক্তব্যগুলো আলোচনা করে তা মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেয়া দরকার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা কমিটির সভাপতি ডা.গঙ্গা মানিক চাকমার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত শিশির চাকমা। প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক এমপি ঊষাতন তালুকদার।
এ সময় এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক এর সহ-সভাপতি অ্যাড ভবতোষ দেওয়ান, অ্যাড জুয়েল দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আশিকা চাকমা, পার্বত্য চট্রগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রোমেন চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। একই বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এম এন লারমা।
আপন দেশ/এমএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।