Apan Desh | আপন দেশ

ক্রেতা কম, গরু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:২৭, ৩১ মে ২০২৫

ক্রেতা কম, গরু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা

ছবি: আপন দেশ

আসন্ন কোরবানী ঈদ ঘিরে গবাদি পশুর বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের খামারিরা। খামারের পাশাপাশি এসব পশু বেচাকেনা হচ্ছে স্থানীয় হাট-বাজারেও। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে চলতি বছরে জেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় তিন লাখ গবাদি পশু। জেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত প্রায় এক লাখ গরু ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাবে। তবে গরুর দাম কম হওয়ায় বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা। তারা জানায়, গো-খাদ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, সে তুলনায় গরুর দাম বলছেন না ক্রেতারা। তাই সব মিলিয়ে কিছুটা লোকসান গুনতে হতে পারে খামারিদের।

সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের ঘাষিয়া পড়া গ্রামের আবু বক্করের খামারে ১১৩টি গরু আছে। তিনি বলেন, ৫ বছর ধরে গরু পালন করি। তবে এখন মনে হচ্ছে, গরুর ব্যবসা মনে হয় আর ধরে রাখতে পারবো না। কারণ দিন দিন গো-খাদ্যের দাম বাড়ালেও গরুর দাম তেমন বাড়ছে না।

তিনি আরও বলেন, গতবছর এ সময়ে খামার থেকে অনেক গরু বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু এবার ক্রেতার দেখা পাচ্ছি না। এবার ভারতীয় গরু ভেবে আটক করছে বিজিবি। তাই ঢাকায় নিয়ে যেতেও ভয় পাচ্ছি। আমরা তো এসব গরু গত ৬-৭ মাস আগে জেলার বিভিন্ন হাট থেকে ক্রয় করেছি। এখন এ গরু যদি বিজিবি আটক করে তাহলে আমরা কোথায় যাবো?

মহারাজপুর এলাকার খামারি আব্দুল আলিম বলেন, গতবছর ঢাকায় গরু নিয়ে যাইনি। ঈদের ৮-১০ দিন আগে বেশ কিছু গরু খামারেই বিক্রি করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এবার ক্রেতার দেখা পাচ্ছি না। আমরা রাজশাহী সিটি হাটে গরু বিক্রি করি। কিন্তু এবার শুনছি, সেখানে ভারতীয় গরু বলে গরু ধরে নিয়ে যাচ্ছে বিজিবি। তাই ঈদে গরু বিক্রি নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় আছি।

আরওপড়ুন<<>>মণপ্রতি ২৮ হাজারে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির গরু

শ্যামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মৌসুমি বেগম ঈদে বিক্রির জন্য বাড়িতে তিনটি গরু পালন করছেন। তিনি বলেন, গ্রামেই এসব গরু বিক্রি করে দেয়। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে গরুর ক্রেতা কম। আমার তেমন গো-খাদ্য কিনতে হয় না। কারণ গরু বাড়িতেই থাকে। জমিতে ঘাস লাগানো আছে। সেখান থেকে খাবারের চাহিদা মিটে যায়। সে ক্ষেত্রে লাভবান হবো বলে আশায় আছি।

একই ইউনিয়নের ভিখু হাসান বলেন, আমি ছোট থেকেই গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। চাহিদা অনুযায়ী খামারে এবার মাঝারি গরু লালন-পালন করেছি। কোরবানির বাজারে মণপ্রতি ৩২-৩৫ হাজারের মধ্যে গরুগুলো বেচাকেনা করতে পারলে কিছুটা লাভ হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. গোলাম মোস্তফা বলেন, খামারিরা এবার ন্যায্যমূল্যে গরু বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছি। তবে গরু আটকের বিষয়টি নিয়ে তারা চিন্তায় আছেন। বিষয়টি সমাধানে আমরা খামারিদের একটি সনদপত্র দিচ্ছি। এটি থাকলে আর সমস্যা হবে না।

গরু আটকের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মনির-উজ-জামান বলেন, ভারতীয় গরু দেখে চেনা যায়। তাই প্রকৃত খামারিদের আশঙ্কার কারণ নেই। তারা যে কোনো সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে গরু নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। শুধু ভারতীয় গরু আটক করা হবে। এটি খামারিদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। আমরা চাই না প্রকৃত খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হোক।

উল্লেখ্য, জেলায় এক লাখ ৩৫ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে নিবন্ধিত ১৩ হাজর ৫২২টি বাণিজ্যিক খামারে গরু লালন-পালন করা হয়েছে দুই লাখ ৬৯১টি।

আপন দেশ/এমএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়