
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ দল
সময়টা বড্ড খারাপ যাচ্ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। দেশে কিম্বা বিদেশে একের পর এক হারে মনোবল হারিয়ে পেলেছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ভাঙ্গা মনোবল নিয়েই শ্রীলঙ্কা সফরে যায় টাইগাররা। মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত আর লিটন দাসদের নৈপুণ্যে সফরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। তবে অল্পের জন্য ফল পায়নি সফরকারীরা। তাই ড্র দিয়েই শুরু হয় লঙ্কা সফর। তবে সিরিজের পরেই টেস্টেই ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজ হারের পর ওয়ানডে সিরিজও খোয়ায় সফরকারীরা।
হারের বৃত্তে থাকা বাংলাদেশ হার দিয়েই শুরু করে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। সিরিজে সমতা ফেরায় তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি রুপ নেয় সিরিজ নির্ধারণী অর্থাৎ অঘোষিত ফাইনালে। এটি লিটন দাসের পুর্ণাঙ্গ অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজ। শ্রীলঙ্কা সিরিজের শেষটা রাঙিয়ে নতুন করে নিজের জাত চেনালেন লিটন।
যদিও সমর্থকরা এতটা আশা করেননি। কারণ টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে ব্যর্থতার পর ভক্তদেরও কেউ ভাবেনি লাল সবুজ দল টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নেবে। প্রথম ম্যাচ হেরে পুরনো ব্যর্থতার সুর তুলেছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে এবং শেষ ম্যাচে দাপুটে জয়ে সব হিসাব উল্টে দিয়েছে লিটনরা। সমতায় ফেরার পরই আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক লিটন দাস জানিয়েছিলেন, নিজের এবং দলের সামর্থ্যে ছিল তার অগাধ বিশ্বাস। এবার সিরিজ শেষে লিটন জানিয়েছেন, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির ফলাফলই তাদের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে সিরিজ জয়ে। যেকোনও দিন ৮৩ রানের জয় টি-টোয়েন্টিতে অনেক বড় অর্জন বলেও মনে করেন তিনি।
আরওপড়ুন<<>>শ্রীলঙ্কাকে কাঁদিয়ে টি-টোয়েন্টি শিরোপা বাংলাদেশের
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লিটন বলেছেন, দল হিসেবে যখন আপনি ম্যাচ জিতবেন, আমার মনে হয় এমনি একটা আলাদা চেহারা বদলে যায়, চাঙ্গা হয়ে ওঠে সবাই। আর দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিটা দেখেন একটা বড় ব্যবধানে জেতা। যেকোনও দিনে আপনি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ৮৩ রানে জিতবেন মানে একটা অনেক বড়। আমার মনে হয় আত্মবিশ্বাসটা সবার ভিতরে ছিল। পুরো দল হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা ভালো ক্রিকেট খেললে জিততে পারবো। আমার মনে হয় ওখান থেকে এ জিনিসটা।
সমতায় ফেরার ম্যাচে লিটন খেলেছিলেন ৫০ বলে ৭৬ রানের ইনিংস। বুধবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ ২৬ বলে খেলেছেন ৩২ রানের ইনিংস খেলেছেন। দুই ইনিংসের পারফরম্যান্সে লিটন হয়ে গেছেন সিরিজ সেরা। তিনি জানালেন, গত ১০ বছরেই আত্মবিশ্বাসের কোনও কমতি ছিল না তার, বিশ্বাস তো সবসময় আছে। সর্বশেষ দশ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছি, বিশ্বাসের কখনও কমতি ছিল না। তাই আমার মনে হয় এক তো হচ্ছে ক্ষুধা, যেহেতু অনেকদিন ধরে রান করছিলাম না। চেষ্টা করছিলাম যে সুযোগটা কখন আসবে, ওই সুযোগটা কীভাবে লুফে নিতে পারি। আমার মনে হয় ওইটা একটা প্লাস পয়েন্ট ছিল আমার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।
প্রথম দুই ম্যাচে বেঞ্চে বসেছিলেন সিরিজ জয়ের মূল নায়ক শেখ মেহেদী হাসান। বুধবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলেছেন এ অফস্পিনার। সুযোগ পেয়েই দলের জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ১১ রানে চার উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। শেষ ম্যাচে মেহেদীকে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে খেলাবেন বলে আগেই ভেবে রেখেছিলেন অধিনায়ক লিটন।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, শেখ মেহেদীকে খেলানোর পেছনে যে কারণ ছিল... আমরা বিশ্বাস করি মেহেদীর যে স্কিল তাতে কলম্বোর উইকেট তার জন্য উপযুক্ত। তার মানে এ নয় মেহেদী ভালো উইকেটে কিংবা অন্য উইকেটে ভালো বোলিং করতে পারবে না। আমরা জানি শেষের ম্যাচটা এখানে, তখন থেকেই পরিকল্পনা ছিল এ মাঠে কেউ খেলুক আর না খেলুক শেখ মেহেদী খেলবে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।