Apan Desh | আপন দেশ

ঈদ আনন্দে নির্বাচনী হাওয়া

আফজাল বারী

প্রকাশিত: ২১:৪২, ৬ জুন ২০২৫

আপডেট: ১০:০১, ৭ জুন ২০২৫

ঈদ আনন্দে নির্বাচনী হাওয়া

ছবি: আপন দেশ

দেশ উঠলো নির্বাচনী সড়কে। তাই এবারের ঈদ হচ্ছে নির্বাচনী মোড়কে। পশু কোরবানি দিতে মহাব্যস্ত ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ। বিশ্বের মুসলিমদের মধ্যে বইছে ঈদ আনন্দের জোয়ার। বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ হলো। শুক্রবার (০৬ জুন) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনুস নির্বাচনী রোড ম্যাপ দিয়েছেন। বলা যায়-দেশে বড় ধরনের কোন অঘটন না ঘটলে আগামী বছরের এপ্রিলের যে কোনো দিন হবে কাঙ্খিত জাতীয় নির্বাচন।

গত তিনটি সংসদে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি দেশের সিংহভাগ ভোটার। এবার মোট ভোটারের একতৃতিয়াংশ ভোটার হবে তরুণ। এ প্রজন্মের ভোটাররা জীবনের প্রথম ভোট প্রয়োগ করবেন। খোজে নিবেন কাঙ্ক্ষিত প্রতিনিধিকে। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ ভোটাররা নির্বাচনের হিসাব নিকাশ পাল্টে দিতে পারে। তবে বিষয়টি মাথায় রেখেই রাজনৈতিক দলগুলো নতুন করে হিসাব-নিকাশ কষছেন। 

আরও পড়ুন<<>> পালানো নেতাদের পুনর্বাসনে রাজনৈতিক দৌড়

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটেছে। পালিয়েছে সরকার ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। এরতিনদিন পর দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আকাঙ্ক্ষা মতে অন্তরবর্তী কালীন সরকার গঠিত হয়। দেশ পরিচালনায় এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রশ্নহীন নির্বাচনের জন্য গঠন করা হয় এ সরকার। যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই সরকার প্রধান হলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

অতীতের অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করেছিল। কিন্তু এবারের বিষয়টি অনেক জটিল। ঝড়ে লণ্ডভন্ড ঘরকে সাজাতে যেমন সময় লাগে। তেমনই লুটেপুটে ফোকলা করা, প্রাতিষ্ঠানিক সকল কাঠামোকে ধসে দেয়া দেশটিকে মাথা সোজা করতে বেশ সময়ের প্রয়োজন ছিল। এ সরকার মাসেমাসে নিয়েছেন ১০। রোডম্যাপে হাতে রাখলেন ১১ মাস।  

এদিকে নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলো দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছিল। বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং তার মিত্ররা। তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের আয়োজন চেয়েছে। 
নির্বাচনের জন্য তারা সরকারের উপর প্রচন্ড চাপ তৈরি করেছিল। তারা চেয়েছিল নির্বাচনী রোড ম্যাপ। আর হারানো নিবন্ধন ফিরে পাবার পর বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীও নির্বাচনী মাঠ গোছাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। যথাযথ সংস্কারের পর নির্বাচন চেয়ে আসছে সংগঠনটি। দিন যতো যাচ্ছিল সংগঠনটির জন্য সুবিধা ততো বাড়ছিল। 

আরও পড়ুন<<>> ব্যাংক লুটছেই নোমান গ্রুপ

অন্যদিকে নতুন দল এনসিপি গঠন করেছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা নেতাদের একটি অংশ। তারা নিজেদের গুছিয়ে নিতে, নিবন্ধন পেতে নির্বাচনকে আরও পিছিয়ে দেবার আশায় ছিল। কিন্ত দেশি-বিদেশী চাপ ও নানামুখি দিক বিবেচনায় নিয়ে অবশেষে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষণা করলেন। 
আর এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে বইতে শুরু করলো নির্বাচনী হাওয়া।

শুধু বোদ্ধারাই নন, সাধারণ মানুষদের মধ্যেও আলোচনা এবারের পবিত্র ঈদুল আযহা হচ্ছে নির্বাচনী আমেজে মোড়ানো। রাজনৈতিক দলের নেতারা এবার ঈদ করছেন নিজ নিজ নির্বাচনী আসনে। ভোটার ও কর্মীদের গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব। দলগুলো অতীতের মতোই দোকান খোলেছে মনোনয়ন বাণিজ্যের।
তবে  বাণিজ্যের টর্নেডোর মতো আঘাত নেছে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ। তিনি ভোটারদের কাছে আহবান জানিয়েছেন তারা যেনো প্রতিশ্রতিশীল, পছন্দের, নতুন বাংলাদেশ গড়তে যে সংস্কার হচ্ছে সেগুলোর শতভাগ বাস্তবায়ন করে এমন দল ও প্রতিনিধিকে বেছেনেয়।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়