Apan Desh | আপন দেশ

আসল শত্রুপক্ষকে চিহ্নিত করা হয়নি: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:৫০, ১২ নভেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৬:২০, ১২ নভেম্বর ২০২৫

আসল শত্রুপক্ষকে চিহ্নিত করা হয়নি: রিজভী

ছবি: আপন দেশ

সরকারের ভেতরেই ভূত আছে—আমি এটা নিশ্চিত। আমরা বারবার বলেছি, কিন্তু সরকারের ভেতর থেকেই আসল শত্রুপক্ষকে চিহ্নিত না করে বরং তারা বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে গেছে। আমি সবার কথা বলছি না, তবে কিছু মানুষ এ চক্রান্তের অংশ।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে জিয়াউর রহমান আর্কাইভ-এর উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের লকডাউ ঘোষণা নিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় নির্বাচন বিলম্ব করার কারণেই ওঁত পেতে থাকা পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের উত্থানের আওয়াজ আমরা পাচ্ছি। তাদের গলার আওয়াজ অডিও-ভিডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আরও তীব্র ও হিংস্রভাবে শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, ১৩ তারিখ লকডাউন। প্রশ্ন হচ্ছে—কিসের লকডাউন, কার লকডাউন? পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে। টাকার তো অভাব নেই তাদের। বাংলাদেশ ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভার—সবখান থেকেই টাকা লুট হয়েছে। সব টাকা তো পাচার হয়নি। সেই টাকা দিয়ে বোমা বানানো তাদের কাছে কঠিন বিষয় নয়।

আরও পড়ুন<<>>যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানের হুঁশিয়ারি ৮ দলের

দুই-একটি মিডিয়া নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের কর্মসূচি ফলাও করে প্রচার করছে। এরা কারা? আমি সবার কথা বলছি না, কিন্তু যারা নিষিদ্ধ বা স্থগিত ঘোষিত দলের মানববিধ্বংসী, হিংস্র ও প্রতিহিংসাপরায়ণ কর্মসূচি প্রচার করছে—তারা কি আইনের আওতায় আসতে পারে না?

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন ক্ষমতায় আছে। যাকে সমস্ত গণতন্ত্রকামী দল সমর্থন করেছে। অথচ নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি দলের কর্মসূচি প্রচার করা হচ্ছে—এটা ফ্যাসিবাদী চক্রান্তের অংশ। এ চক্রান্তের নেটওয়ার্ক শুধু ফ্যাসিবাদীরাই করছে না, এর সঙ্গে আরও বিভিন্ন শক্তি জড়িত হয়েছে। আমাদের সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, এখানে দুইটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে—একটি হচ্ছে তাদের অমানবিক নিষ্ঠুরতার চেহারা, যা অনেক আগে থেকেই বিদ্যমান। রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে তারা নিজেরাই বিভিন্ন সময়ে বাসে আগুন দিয়ে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপিয়েছে। আমরা তখনই বলেছিলাম—এটা সরকার নিজেরাই করছে। এর প্রমাণও আমরা দিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, একজন রাজনৈতিক দলের নেতা বলেছেন, গণভোট না হলে ২০২৯ সালে নির্বাচন হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে জনগণ ১৫–১৬ বছর ধরে বঞ্চিত। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারছে না। এ বেদনাকে আপনারা পিআর বলে উপহাস করছেন। অথচ পিআর-এ তো কোনো প্রার্থী থাকবে না, সেটা নিয়েও আপনারা কিছুদিন হৈ চৈ করলেন, বললেন এর আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তাহলে আসল কাজটা করবেন কবে? এত সংগ্রাম, আত্মদান, রক্তপাতের উদ্দেশ্য ছিলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। যদি দুটি প্রক্রিয়া একসাথে চলে, ক্ষতি কী? এতে বরং আইনি বৈধতা ও বাধ্যবাধকতা উভয়ই নিশ্চিত হবে। যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা জুলাই সনদকে আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। তাই এটিকে বিলম্বিত করার কোনো কারণ নেই।

তিনি আরও বলেন, সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে অন্তত কয়েকটি ন্যূনতম বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অগণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে প্রতিরোধ করতে হবে। তাহলেই আমরা এ দেশটিকে একটি সুন্দর জায়গায় উপস্থাপিত করতে পারবো।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় দে রিপন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ডা. জহুরুল হক, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ প্রমুখ।

আপন দেশ/এসআর

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়