Apan Desh | আপন দেশ

জুলাই সনদের বাইরের সিদ্ধান্তের দায় সরকারের ওপরেই বর্তাবে: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৩২, ১১ নভেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৪:৩৯, ১১ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই সনদের বাইরের সিদ্ধান্তের দায় সরকারের ওপরেই বর্তাবে: বিএনপি

ছবি: আপন দেশ

‘জুলাই সনদের বাইরে যে কোনো সিদ্ধান্তের দায় সরকারের ওপরেই বর্তাবে’ বলে জানিয়েছে বিএনপি। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জুলাই সনদের বিষয়াদির বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মান্য করার বাধ্য বাধকতা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে সকল দায় দায়িত্ব সরকারের উপরই বর্তাবে। এ ব্যাপারে সর্তক পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

উপদেষ্টাদের কারো কারো বক্তব্য বিভ্রান্তিকর দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে কোন কোন বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের ঘোষণা প্রসঙ্গে যে সকল বক্তব্য দিচ্ছেন তা বিভ্রান্তিকর এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করার শামীল।

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এ বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তির বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তা জানাতে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে আসেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যে প্রস্তাব গ্রহীত হয়েছে তা হলো রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ প্রায় এক বছর যাবৎ আলোচনার ভিত্তিতে কতিপয় নোট অফ ডিসেন্টসহ ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত জুলাই জাতীয় সনদ বিগত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হয় এবং দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে সকলে অঙ্গীকারবদ্ধ হই।

আরও পড়ুন<<>> জুলাই সনদ নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার

এক প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাক্ষরিত হয়েছে। সে সনদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন দফায় কিছু নোট অফ ডিসেন্ট আছে, সে নোট অফ ডিসেন্ট গুলোর ক্ষেত্রে বলাও আছে সনদে যে, দলগুলো যদি নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে জনগণের ম্যান্ডেট পায় নোট অফ ডিসেন্টগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে আমরা একশত ভাগ একমত, এখনো আমরা সে জায়গায় আছি এবং আমরা স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে নাই। কিন্তু যেভাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সনদ বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত যে সুপারিশ প্রদান করেছে তার মধ্যে নোট অফ ডিসেন্ডার অংশগুলো উল্লেখিত নেই….একদম নেই। শুধু প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে ৪৮টা দফা দিয়ে তারা একটা তফসিল করেছে। সে তফসিলে প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে গণভোটের প্রস্তাব করেছে।

তিনি বলেন, গণভোটের বিষয়ে আমরা একটা জাতীয় ঐকত্যের স্বার্থে একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি নেয়ার জন্য জুলাই জাতীয় সনদের উপরে আমরা রাজি হয়েছিলাম …সেই জায়গায় আমরা আছি। এখন এ স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে গিয়ে কোন কোন রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য যে অযৌক্তিক এবং নতুন নতুন ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করছে সে ব্যাপারে তারা বক্তব্য প্রদান করতে পারেন। এর বাইরে আমরা সনদের স্বাক্ষরিত যে বিষয়গুলো আছে তার বাইরে যদি সরকার কোন সিদ্ধান্ত নিতে যায় সেটা কোন রাজনৈতিক দল যারা সমাজে সই করেছে তাদের উপরে কোন দায় দায়িত্ব বর্তাবে না বা মানতে বাধ্য নয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির বিধান সংবিধানে নেই উল্লেখ করে সালাহ উদ্দিন বলেন, আদেশের বিষয়ে আমরা স্পেসিফিক কোন প্রস্তাব এরকম দেইনি যে আদেশ কে জারি করবে। আমরা একটা সাংবিধানিকতার মধ্যে আছি। সাংবিধানিকভাবে এ সরকার শপথ নিয়েছে, সবকিছু আইনানুকভাবে চলছে। এখন কোন অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা এ সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতির। যদি কোন আদেশ জারি করতে হয় সে আদেশের মর্যাদা যদি আইনি হয় সেই আদেশ জারি করার মত কোন সাংবিধানিক অবস্থা বাংলাদেশে নেই।

কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট অর্ডারটা জারি করার একটা বিধান একসময় ছিল যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়নি। আপনারা সবাই জানেন, সেরকম ‘পিও’ অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট অর্ডার নিয়ে তখন রাষ্ট্র চলত। সংবিধান গৃহীত হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির আর কোন বিধান রইল না। সেটা বিলুপ্ত হয়েছে। এখন কী রকম আদেশ দিবে সেই আদেশের মর্যাদা কি আইনি মর্যাদা হবে সেটা এখনো সরকার নির্ধারণ করেনি। একমাত্র অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা ছাড়া রাষ্ট্রপতির অন্য কোনভাবে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা এখন নেই। আদেশ জারি করার কোনো বিধান বর্তমান সংবিধানে নেই।

সাবেক এ বিচারক বলেন, তবে এখন কোনো প্রজ্ঞাপনকে আদেশ নামকরণ করতে চায় এবং সেটার আইনি মর্যাদা না থাকে সেটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার প্রকাশ করতে পারে গ্যাজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে। আইন হবে না সেটা।

গণভোট ইস্যুতে আলোচনা সুযোগ আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন বলেন, সেটা সরকার যদি আলোচনার জন্য আহবান জানায় সেক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকতে পারে। রাজপথে তো নয়।

রাজনৈতিক টানাপোড়ন প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এখানে নির্বাচনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারছে না, নানাভাবে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে তারাই এ বিশৃঙ্খলা করছে। তাই এটা সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ের কারণেই কিন্তু হচ্ছে না। আজকে যে বিষয়ে আমরা সরকারকে সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহবান জানিয়েছি। এটার সঙ্গে বর্তমানে যে সৃষ্ট যে অসন্তোষ বা অশান্তি তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে আমরা মনে করি।

সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

আপন দেশ/এবি

 

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়