ছবি: আপন দেশ
একটি দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিচ্ছে। একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে, অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যথাসাধ্য সহযোগিতা করে আসছি। অথচ আমরা দেখছি, একের পর এক নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপন্ন করে তোলা হচ্ছে। এর পরিণতি সম্পর্কেও আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
রোববার (০২ নভেম্বর) গুলশানের লেকশোর হোটেলে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন মন্তব্য করেছেন।
তারেক রহমান বলেন, শুধুমাত্র বিএনপির পরাজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিগত ১৫ বছর সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছিল। উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপিকে কোনোভাবেই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
পতিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসনামলে জনগণের নির্বাচনের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিল না জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে কোনো কোনো সময় জনমনে প্রশ্ন বাড়ছে—যথাসময় কি নির্বাচন হবে?
এমন হওয়ার কথা ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে গণমনে সৃষ্ঠ সংশয়-সন্দেহ গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে হয়তোবা সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে।
কৌশল এবং অপকৌশলের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে ব্যর্থ হলে কোনো অগণতান্ত্রিক এবং অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাঁটতে হয় কি না সন্দেহ প্রকাশ করে তারেক রহমান বাংলাদেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে এমন বিপদের বিষয়ে সতর্ক করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী অথবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের লক্ষ্যে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে।
জনসমর্থিত এবং জনপ্রিয় দল হিসেবে প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন,দেশের প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও প্রত্যেকের নিশ্চয়ই মনোনয়ন পাওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথে সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীদেরও বিএনপি সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বাস্তবতার কারণে কিছু কিছু আসনে বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন।
সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি দেশ ও জনগণের স্বার্থে এ বাস্তবতা মেনে নেয়ার আহবান জানান তিনি। এ সময় দলের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসেবে সবাইকে মেনে নেয়ার আহবানও জানান তারেক রহমান।
শিগগিরই পর্যায়ক্রমে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। নেতাকর্মীদের আবারও সতর্ক করে দিয়ে তারেক রহমান বলেন, আপনাদের চারপাশে সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গুপ্ত স্বৈরাচারেরা ওঁত পেতে রয়েছে। নিজেদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিরোধ না রাখতে অনুরোধ করে তিনি জানান, এসবের কারণে প্রতিপক্ষ যেন কোনো সুযোগ নিতে না পারে।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সবসময় বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণে ষড়যন্ত্রকারীরা অধিকাংশ সময় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে বিএনপি একটি বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যুগের পর যুগ ধরে বিএনপি জনপ্রিয়তার ধারা ধরে রেখেছে, ধরে রাখার চেষ্টা করেছে।
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































