
রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনে মুজিবুল হক চুন্নু।
দলের ভেতরে বিভক্তি, নেতৃত্বের সংকট ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মতো কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে তাতে সন্দেহ নেই। এ কথা জানিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু অতীতের ‘নৈতিক ভুল-ভ্রান্তির’ জন্য দেশবাসীর কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।
শনিবার (০৯ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত প্রায় ৪ বছরে আমি জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে অনেক ভুল-ভ্রান্তি আমার থাকতে পারে, সেগুলো আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দেশবাসীর কাছে আমি একটি কথাই বলব- আমরা রাজনীতি করতে গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে সব সময়ে হয়তো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমাদের স্বীকার করতে হবে, সব দিন আমাদের উজ্জ্বল ছিল না। দলের ভেতরে বিভক্তি, নেতৃত্বের সংকট ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মতো কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে- সন্দেহ নাই। এর ফলে সাধারণ মানুষের আস্থায় কিছুটা হলেও ফাটল ধরেছে। যা মেরামত করা সময়ের দাবি।
চুন্নু বলেন, আমরা বিগত অনেকগুলো নির্বাচন করেছি, অনেক সময়ে অনেকে আমাদের হয়ত বিভিন্নভাবে কটূক্তি করেন। বিভিন্ন দলের সহযোগী বা স্বৈরসহযোগী হিসেবে আমাদেরকে আখ্যায়িত করেন।
আরও পড়ুন>>>ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন: সিইসি
আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে কোনো বেআইনি কাজ করেননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি কথাই বলব, আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে কোনো বেআইনি কাজ করিনি। যদি নৈতিকভাবে ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে সে জন্য আজকের দিনে এ কাউন্সিলে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাই।
গত ৭ জুলাই সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলের ১০ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের। পরে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা আদালতের দ্বারস্থ হলে ৩১ জুলাই জি এম কাদের এবং যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন আদালত। জি এম কাদেরকে সরিয়ে রেখেই আজ দশম সম্মেলন করেছেন জাতীয় পার্টির নেতারা। যেখানে দলের অন্য অংশের নেতাদেরও দেখা গেছে।
জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে চুন্নু বলেন, আদালতের আদেশে আমাদের দলের চেয়ারম্যানের একগুঁয়েমি, দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপ, স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে আদালতের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয় তার ওপর।
জাতীয় পার্টি কখনো চ্যালেঞ্জের কাছে মাথা নত করেনি দাবি করে তিনি বলেন, সে মুহূর্তে (নিষেধাজ্ঞার পর) প্রেসিডিয়াম-গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা পিছিয়ে যাব না। এগিয়ে যাব। সে সিদ্ধান্তের ফলে আজকের এ ঐতিহাসিক কাউন্সিল অধিবেশন।
এ সম্মেলনকে ইতিহাসের ‘গুরুত্বপূর্ণ বাঁক’ মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, আজকের এ দিনটি কেবল একটি রুটিন অনুষ্ঠান নয়৷ এটি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক; যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি নতুন সিদ্ধান্ত, নতুন দায়িত্ব, নতুন স্বপ্নের প্রান্তে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।