Apan Desh | আপন দেশ

‘একটি দলের কাছে সরকার আত্মসমর্পণ করেছে’

নিজেস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:১১, ৬ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ২২:১৪, ৬ আগস্ট ২০২৫

‘একটি দলের কাছে সরকার আত্মসমর্পণ করেছে’

মামুনুল হক।

একটি নির্দিষ্ট দলের চাপের কাছে সরকারের আত্মসমর্পণ করেছে। ফলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত জনগণ। এ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক।

 একই সঙ্গে তিনি প্রধান উপদেষ্টার জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘোষণাপত্র ইসলামপন্থীদের মতামত, অবদান ও আত্মত্যাগকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। একটি মাত্র দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

বুধবার (০৬ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মাওলানা মামুনুল হক এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছেন— আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা শিক্ষক ও ছাত্র, প্রবাসী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অবদান সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর গণহত্যা ও পিলখানা ট্র্যাজেডির মতো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনার কোনো উল্লেখ নেই ঘোষণাপত্রে।

আরও পড়ুন>>>নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

মামুনুল হক অভিযোগ করেন, গত দেড় দশক ধরে যারা ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, মূলধারার সে সব ইসলামী নেতাদের কেউই ঘোষণাপত্রের মঞ্চে স্থান পাননি। তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শও করা হয়নি। সবকিছু একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। এ সময়সীমা যৌক্তিক। তিনি এ ঘোষণাকে স্বাগত জানাতে পারছেন না। কারণ, এটি কোনো জাতীয় সংলাপ বা ঐকমত্যের ভিত্তিতে আসেনি। বরং একটি দলের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে গণতন্ত্রের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট দলের চাপের কাছে সরকারের আত্মসমর্পণ বাস্তবায়িত হয়েছে। এর ফলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত।

মামুনুল হক বলেন, জনগণের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ভবিষ্যতের সংসদের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও সংস্কারের দাবির সঙ্গে প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মনে করেন, প্রকৃত সংস্কার, ফ্যাসিবাদের বিচার, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হলে কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণার আগে যদি ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হতো, তাহলে একটি বাস্তবসম্মত ও গ্রহণযোগ্য রূপরেখা তৈরি করা সম্ভব হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তা হয়নি। আবারও জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে।

মামুনুল হক সরকারের প্রতি আহবান জানান, নির্বাচনের আগে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি অধ্যাদেশ জারি করে 'জুলাই সনদ' বা 'জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র'-কে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এতে প্রয়োজনীয় সংশোধনীও আনতে হবে। অন্যথায় এ ঘোষণাপত্র, নির্বাচন ও অন্তর্বর্তী সরকারের পুরো প্রক্রিয়াটিই জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়