Apan Desh | আপন দেশ

সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি কম, সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১২ নভেম্বর ২০২৫

সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি কম, সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ফাইল ছবি

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঢাকায় লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর আগেই গত দুদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চোরাগোপ্তা ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে সড়কে যানবাহন চলাচলে। অন্য সাধারণ দিনের তুলনায় বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল কিছুটা কম।

গত দুদিন গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চোরাগোপ্তা ককটেল বিস্ফোরণে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এসব নাশকতা ঠেকাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। তবে এ অবস্থায় অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হওয়া এড়িয়ে চলছেন।

তবে অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে মোটরসাইকেল, রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল। অন্য সময়ের মতো ভিআইপি সড়কে আজও রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। সড়কে বাস চলাচলও স্বাভাবিক।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, মিন্টো রোড ও হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকায় গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ প্রাইভেটকারের চলাচল তুলনামূলক কম।

আরও পড়ুন<<>>সরকারকে হুমকি না দিয়ে চলুন জনগণের মুখোমুখি হই: তারেক রহমান

সড়কে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, যানবাহনে আগুন ও বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ব্যক্তিগত গাড়ি কম বের হয়েছে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচি ঠেকাতে কঠোর সরকার। রাস্তাঘাটে কোনো ব্যক্তি নাশকতা করতে পারেন, এমন সন্দেহ হলেই তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে। কিছু চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশি করতেও দেখা গেছে।

রাজধানীর লালবাগ, আজিমপুর, নিউমার্কেট ও ধানমন্ডি এলাকায় তুলনামূলক গাড়ির সংখ্যা কম দেখা গেছে। তবে নিউমার্কেট খোলা থাকায় মার্কেটের সামনের সড়কে কিছু গাড়ির জটলা দেখা গেছে।

বাড্ডা লিংক রোডে বেশ কিছু রিকশা ও মোটরসাইকেলকে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সেখানে কথা হয় মুসা মল্লিক নামের এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে। ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান মুসা বলেন, অনেকে নিজের গাড়ি রেখে গণপরিবহনে চলাচল করছেন। রাস্তাঘাটে লোকজনও কম মনে হচ্ছে।

দুপুরে মহাখালী, গুলশান, বাড্ডা ও রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ তেমন নেই। তল্লাশি কার্যক্রমও চলছে এসব এলাকায়। তবে অনেকেই মোটরসাইকেলে ভাড়ায় রাইড শেয়ার করছেন। ভাড়ায় চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশাও।

রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও থানায়-থানায় নিরাপত্তা জোরদার

গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দুর্বৃত্তদের ককটেল বিস্ফোরণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা জায়গায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই।

গত কয়েক দিনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে, ডিএমপির ৫০টি থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র অনুযায়ী, দুর্বৃত্তরা শুধু ককটেল বিস্ফোরণ বা বাসে আগুন দিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে। সর্বশেষ, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের গার্লস শাখায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। যদিও এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছেন।

বিশেষ নজর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসব রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়াও রাজধানীর বনানী, উত্তরা, বাড্ডা, পল্টন ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সম্পূর্ণ ধানমন্ডি এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতিটি থানার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নাশকতার শঙ্কায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে শুরু করে প্রতিটি থানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৮ থেকে ১০ জন করে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

রমনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় গত কয়েক দিন ধরে রমনা থানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। শুধু থানায় নয়, রমনা থানার অধীনে যেসব এলাকা আছে, সেসব এলাকায়ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

ডিএমপির শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, থানার সামনে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েনের বিষয়টি স্বাভাবিক নিরাপত্তা কার্যক্রম। এছাড়া, শাহবাগ থানা এলাকায় প্রায়ই দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংঘটিত হয়। এসব বিষয় এবং বর্তমান পরিস্থিতি মাথায় রেখে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

আপন দেশ/এসআর

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়