
ছবি : আপন দেশ
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করার সময়সীমা শেষ হচ্ছে রোাবার (২২জুন)। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যে দলগুলো নিবন্ধনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তারা এদিনের মধ্যেই আবেদনপত্র জমা দিতে পারবে। সময়সীমা পেরিয়ে গেলে আর কোনো আবেদন গ্রহণ করবে না ইসি। এরপর শুরু হবে আবেদনপত্রগুলোর প্রাথমিক যাচাই-বাছাই।
কোনো দলকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়। এ নিবন্ধন পেতে কিছু শর্ত পূরণ করার বিধান আছে। গণ–অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এসব শর্ত কিছুটা সহজ করার সুপারিশ করেছে। তবে সে সুপারিশ এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বিদ্যমান আইনে অর্থাৎ আগের শর্তেই নিবন্ধনের আবেদন চেয়েছে ইসি।
গত ১০ মার্চ নতুন দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। প্রথমে আবেদনের শেষ সময় ছিল ২০ এপ্রিল। বিভিন্ন দলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পরে আবেদনের সময় ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রোববার নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করার কথা রয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৫টি দল নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করে। এর বাইরে ৪৬টি দল নিবন্ধনের আবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছিল। সময় বাড়ানোর পর অনেকগুলো দল আবেদন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত মোট কতটি দল আবেদন করেছে, তার চূড়ান্ত হিসাব করা হয়নি।
এখন ইসিতে নিবন্ধিত দল আছে ৫০টি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে। এখন পর্যন্ত যেসব দল ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, তার বেশির ভাগই নামসর্বস্ব। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৯৩টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। তবে বেশির ভাগই ছিল নামসর্বস্ব দল। প্রাথমিক নথিপত্র বাছাইয়েই বাদ পড়েছিল ৮১টি দলের আবেদন। শেষ পর্যন্ত নিবন্ধন পেয়েছিল নামসর্বস্ব দুটি দল।
জাতীয় নির্বাচন–সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কিছু শর্তের উল্লেখ আছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, অন্তত এক–তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কার্যালয় ও অন্তত ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন (মহানগর) থানায় কার্যালয় এবং প্রতিটি কার্যালয়ে ন্যূনতম ২০০ ভোটার তালিকাভুক্ত থাকতে হবে।
এর বাইরে নিবন্ধনের জন্য দলের গঠনতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বিধান থাকতে হয়। যেমন কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা, সব পর্যায়ের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ সদস্যপদ নারীদের জন্য নির্ধারিত রাখা এবং পর্যায়ক্রমে ২০৩০ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বা শ্রমিক ও অন্য কোনো পেশার সদস্যদের সমন্বয়ে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন না থাকা ইত্যাদি।
সাধারণত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহবান করে ইসি। নির্ধারিত সময়ে যারা আবেদন করে, প্রথমে তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয়। আইন ও বিধিমালা মেনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করা না হলে বাছাইয়ে আবেদন বাতিল করে দেয়া হয়। ছাইয়ে যেসব দলের আবেদন টেকে, তাদের বিষয়ে মাঠপর্যায়ে তথ্য যাচাই-বাছাই করেন ইসির কর্মকর্তারা। সেখানে মূলত দলের মাঠপর্যায়ের কার্যালয় আসলেই আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা হয়। যাচাই–বাছাই শেষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় নির্বাচন কমিশনে। পরে কমিশন নিবন্ধনের অনুমোদন দিয়ে থাকে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।