
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
একে একে সামনে আসছে শেখ হাসিনার ফোনালাপ। তাপস-ইনুর পর এবার প্রকাশ হলো উপ-সামরিক সচিব (ডিএসপিএম) কর্নেল রাজিবের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর সরাসরি গুলির নির্দেশনাও দেয়া হয় ফোনে। তাদের সে কথোপকথনটি শোনানো হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন>>>ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে অস্থায়ী কারাগার ঘোষণা
শুরুতেই জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিয়ে নির্মিত ডেইলি স্টারের একটি প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। এ ভিডিওতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার ভূমিকাসহ আওয়ামী লীগের দুর্গ ভেঙে পড়ার বিবরণ দেয়া হয়। ওই ভিডিওতেই একজন ল' এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির এক কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপের কথা বলা হয়। পরে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শোনানো হয় সেই অডিও রেকর্ড।
ফোনালাপটির প্রথমে কল ধরতেই স্যার সম্বোধন করে সালাম দেয়া হয়। ঠিক তখনই শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ওরা কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখন জমায়েত হতে শুরু করেছে। মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও বিভিন্ন জায়গায়৷ শুরুতেই কিন্তু ইয়ে.....করতে হবে, একদম শুরুতেই। ধাওয়া দিলে এরা গলিতে গলিতে থাকবে। এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা।
এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে কথোপকথনের অপরপ্রান্তের ব্যক্তি হলেন কর্নেল রাজিব। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে নেই। গত বছরের ২৯ জুলাই ফোনের মাধ্যমে রাজিবকে এ নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার শেষ কথা হচ্ছে- এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা। মানে আসামাত্রই গুলি করা হবে। এটাই নির্দেশনা ছিল।
গতকাল (রোববার) এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়। বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন। এতে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের ইতিহাস তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে গুম-খুনসহ নারকীয় সব ঘটনার বর্ণনা দেন। আর এসব বিবরণ এ মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।