
ছবি সংগৃহীত
গাজা সিটি দখলে হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। দখলদার বাহিনীর নৃশংসতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু, নারী, সাংবাদিক ও ত্রাণপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষ। গত ২৪ ঘন্টায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় নারী-শিশু-সাংবাদিকসহ আরও ১০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকদিন ধরে তীব্র বোমাবর্ষণে শতাধিক মানুষ মারা যান। তাদের মধ্যে অন্তত ৩২ জন খাদ্য ও সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন।
আল জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি বলেন, গাজা শহর এখন যেন এক খাঁচা, যেখানে মানুষ বেঁচে থাকার জন্য লড়ছে। আকাশ থেকে হামলা চলছে, আবার ক্ষুধায় মরছে। যে দিকেই যাচ্ছে, বোমা তাদের পিছু নিচ্ছে।
মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) একদিনেই অনাহারে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬১ জনে। এর মধ্যে আগস্টের ২২ তারিখ থেকে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হওয়ার পর ৮৩ জন মারা গেছেন।
খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় পানি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৭ শিশুও ছিল। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, জীবন বাঁচাতে পানি খুঁজতে গিয়ে তারা নতুন হত্যাযজ্ঞের শিকার হলো।
আরও পড়ুন<<>>আফগানিস্তানে ফের ভূমিকম্প, ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
এছাড়া গাজা শহরে আল-আফ পরিবারের বাড়িতে বিমান হামলায় নারী-শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।
হামলায় আল-মানারা টিভির রাসমি সালেম ও ইমান আল-জামলি নামে দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ২৭০ ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, সাংবাদিকদের জন্য এটি ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত।
ইসরায়েলি সেনাপ্রধান আইয়াল জামির জানান, গাজা শহরে স্থল অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই হাজার হাজার রিজার্ভ সেনা ডাকা হয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, অন্তত ৩৬৫ সেনা কর্তৃপক্ষের ডাকে সাড়া দেননি।
অন্যদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিলেও ইসরায়েল এখনও কোনো সাড়া দেয়নি।
বেলজিয়াম মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে অন্য দেশগুলোকেও একই পথে এগোনোর আহ্বান জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও অভিযোগ করেছে, বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা গাজার গণহত্যা, দুর্ভিক্ষ ও অর্থনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞকে দীর্ঘায়িত করছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।