Apan Desh | আপন দেশ

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১৬ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১১:৩৫, ১৬ জুলাই ২০২৫

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা

ছবি: সংগৃহীত

টানা তিন মাসের অবরোধের পর গত ২০ মে থেকে গাজায় পুনরায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েল। তবে এ মানবিক সহায়তা ফিলিস্তিনিদের জন্য আরেক মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। ক্ষুধার জ্বালায় ত্রাণ নিতে এসে প্রাণ হারাচ্ছেন অসহায় গাজাবাসী। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘন্টায় দখলদার ‘ইসরায়েলি’ বাহিনীর হামলায় দুই ত্রাণপ্রার্থীসহ আরও ৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 

বুধবার (১৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (১৫ জুলঅই) উত্তর গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালায় ‘ইসরায়েল’। এতে অন্তত ২৩ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়া, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহর উত্তরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ‘ইসরায়েলি’-যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ পয়েন্টে হামলায় দুজন নারী নিহত হন এবং আহত হন আরও ৩০ জন।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে সিভিল ডিফেন্স টিমগুলো ১৮ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করে, যাদের বেশিরভাগই বিমান হামলার শিকার। গাজা শহরের বাস্তুচ্যুতদের তাবু লক্ষ্য করেও চালানো হয় হামলা, এতে আরও ছয়জন প্রাণ হারান। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার উত্তরের ১৬টি এলাকা খালি করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জাবালিয়াও। এতে আতঙ্কিত মানুষজন এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন, যদিও জ্বালানির অভাবে গন্তব্যে পৌঁছানো কঠিন হয়ে উঠেছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সাংবাদিক মোয়াত আল-কাহলুত জানিয়েছেন, মানুষ ঘোড়া ও গাড়ি ব্যবহার করে পালাচ্ছে, কিন্তু তারা জানে না কোথায় যাবে। চারদিকে বিশৃঙ্খলা এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে, ইউএনআরডব্লিউএ-এর স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক করেছে, চলমান অবরোধ এবং সহিংসতার কারণে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার দ্রুত বাড়ছে। সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ২০২৪ সালে পরীক্ষিত প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। এ অপুষ্টিকে তিনি “মানবসৃষ্ট ও পরিকল্পিত” সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এ ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ব্রাসেলসে বৈঠকে বসেন। সেখানে ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কাল্লাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য ১০টি পদক্ষেপের প্রস্তাব দেন—যার মধ্যে রয়েছে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, এবং ইইউ-ইসরায়েল সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করা। তবে বৈঠকে এসব নিয়ে চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।

কাল্লাস সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের লক্ষ্য ইসরায়েলকে শাস্তি দেয়া নয়, বরং গাজার মানুষের জন্য মানবিক পরিস্থিতি উন্নত করা।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়