Apan Desh | আপন দেশ

স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধন, বয়সসীমা শিথিল

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ২০:২১, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধন, বয়সসীমা শিথিল

ফাইল ছবি

সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিতে বয়সসীমা তুলে দেয়া হয়েছে। এতে যারা বয়সসীমার কারণে আবেদন করতে পারছিল না, তারা এখন আবেদন করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত বয়সের দিকে অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) মাউশির জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধনের বিষয়টি জানানো হয়। এতে সই করেছেন মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল।

ভর্তির সংশোধিত এ নীতিামালায় ‘পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে’ অংশটি বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমা আর থাকছে না।  

আরও পড়ুন<<>>সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে

মাউশির জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনলাইন আবেদন চলমান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১৩ নভেম্বর শিক্ষার্থী ভর্তির যে নীতিমালা প্রকাশ করেছিল, তার অনুচ্ছেদ-২ -এ থাকা বয়স নির্ধারণ অংশে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সংশোধিত নীতিমালা বয়স নির্ধারণ অংশ বলা হয়, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ০১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। যেমন, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে অর্থাৎ, সর্বনিম্ন জন্ম তারিখ হবে ০১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত। সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ, জন্ম তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত।

এতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেয়া যাবে। 

জানতে চাইলে মাউশির মাধ্যমিক শাখার সহকারী পরিচারক (মাধ্যমিক-১) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, বয়সসীমা নিয়ে জটিলতা ছিল। এ নিয়ে অনেক অভিযোগ আসছিল। অনেক অভিভাবক জানাচ্ছিলেন, তাদের সন্তানের ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না। এজন্য দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণির বয়সসীমাটা এক রকম তুলে দেয়া হয়েছে।

তাহলে যে কেউ দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে আবেদন করতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অভিভাবকদের শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনাগুলোও অনুসরণ করতে হবে। সেখানে  ষষ্ঠ, অষ্টম ও নবম-দশমে রেজিস্ট্রেশনের একটি নির্দিষ্ট বয়স প্রয়োজন হয়। যেমন এ বছর শিক্ষা বোর্ড ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ৯ বছর করেছে। এখন কেউ  ৯ বছরের নিচের বয়সীকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করালে বিপাকে পড়বেন। ফলে বোর্ডের বয়সসীমাটা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন চালু রয়েছে। ২০২৫ সালের ২০ আগস্টের সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়স ৯ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছর। তবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২০ বছর।

আর অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়স ১১ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৭ বছর। তবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২২ বছর। সব সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা বোর্ডের অধীন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।

গত ২১ নভেম্বর থেকে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির অনলাইন আবেদন শুরু হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৫ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

মাউশির তথ্যমতে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে চার হাজার ৪৮টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এবার সরকারি স্কুলের সংখ্যা ৬৮৮টি এবং বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা তিন হাজার ৩৬০টি।

সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট শূন্য আসন ১১ লাখ ৯৩ হাজার ২৮১টি। এরমধ্যে সরকারি স্কুলে শূন্য আসন এক লাখ ২১ হাজার ৩০টি এবং বেসরকারি স্কুলে আসন ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৫১টি।

গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি স্কুলের এক লাখ ২১ হাজার ৩০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিল দুই লাখ ৬০ হাজার ২৪৪ জন। তারা পছন্দক্রম দিয়েছিল তিন লাখ ৭৫ হাজার ৭২৮টি।

অন্যদিকে বেসরকারি স্কুলে ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৫১টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিল ৯৮ হাজার ৭৬২ শিক্ষার্থী। তারা পছন্দক্রম দিয়েছিল এক লাখ ৮০ হাজার ৮৬২টি। এরপর আর আবেদন জমা পড়ার নতুন তথ্য জানায়নি মাউশি।

আপন দেশ/এসআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়