নিজেকে রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা দেয়া ছাত্রী পেলেন ছাত্রদলের শীর্ষ পদ

‘আমি একজন ছাত্রী, কেবলই ছাত্রী’ গত বছরের ০৪ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি পোস্ট দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিন বিশ্বাস এশা। 

ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টে তিনি নিজেকে রাজনৈতিক ট্যাগবিহীন পরিচয়ে পরিচিত করতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, রাজনৈতিক কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে অতীতেও যুক্ত ছিলাম না। বর্তমানেও নেই, ভবিষ্যতেও হব না ইনশাআল্লাহ।

কিন্তু এক বছরের ব্যবধানে দৃশ্যপট যেন একেবারে বদলে গেছে। এশা এখন রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক!

ফেসবুকে গত বছরের ০৪ আগস্ট তিনি লেখেন, অবস্থান স্পষ্ট! আমি একজন ছাত্রী! কেবলই ছাত্রী। আমার ছাত্রত্বের পাশে কোনো ধরনের ট্যাগ, যেমন: লীগ, দল, জামাত, শিবির ইত্যাদি রাজনৈতিক ট্যাগ যুক্ত করবেন না। রাজনৈতিক কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে অতীতেও যুক্ত ছিলাম না, বর্তমানেও নেই, ভবিষ্যতেও হব না ইনশাআল্লাহ। It's loud and clear

এ নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে উঠেছে প্রশ্ন, যে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে রাখার অঙ্গীকার করেছিলেন, তিনি কীভাবে একটি রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হলেন?

আরওপড়ুন<<>>বাকৃবিতে নবাগত শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু ১১ আগষ্ট

ছাত্রদলের একাধিক নেতা এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, যারা মাঠে আন্দোলনে ছিলেন, তারা অনেকেই তালিকায় নেই। অথচ যারা আগে বলতেন তারা রাজনীতি করেন না, তারাই এখন বড় বড় পদে বসে আছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জাহিন বিশ্বাস এশা বলেন, তখন ছিল আন্দোলনের সময় এবং সকলের একটাই পরিচয় ছিল সাধারণ ছাত্র। আমার তখন অবস্থান যা ছিল সেটিই উল্লেখ আছে। যখন ছাত্রলীগ তাড়ানো হলো- ক‍্যাম্পাস থেকে, তখন সকলে মিলে অরাজনৈতিকভাবেই বাস্তবায়ন করে। আর সে সময় কেউ যদি নিজেকে রাজনৈতিকভাবে প্রেজেন্ট করত, তাহলে আন্দোলনটা অবশ্যই স্বৈরাচার সরকার অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিত। কারণ তখন সে আন্দোলনকে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল সকলেই জানে। আন্দোলন পরবর্তী প্রেক্ষাপট কি আসলে তাই? 

তিনি আরও বলেন, আমার নিজের সঙ্গে ট‍্যাগ আনুষ্ঠানিকভাবে সত্যিই তো ছিল না। তবে পরোক্ষভাবে বিএনপির ট‍্যাগ পারিবারিকভাবেই আমার ছিল। তখনও যারা আমাকে চিনতো, সকলেই জানতো আমি জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী। আন্দোলন ছিল সার্বজনীন, আমার ছিল সে আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ। সে প্রেক্ষিতে নিজেকে এ অবস্থানে ডিক্লেয়ার করা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে তরুণদের রাজনীতিতে প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। আন্দোলনে যেমন নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, তেমনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নারী অধিকার,নারী নেতৃত্ব অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে জানতে রাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সরদার জহুরুলকে ফোন ও টেক্সট করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আপন দেশ/এমএইচ