
ছবি: আপন দেশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। বৃহস্পতিবার (০১ মে) নির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিত করতে বাধ্য হয় রুয়া অ্যাডহক কমিটি। এমন ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে তীব্র ক্ষোভ নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের একাংশ। সেখানে যুক্ত হয় বর্তমান শিক্ষার্থীরাও। উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকে ঝুলিয়ে দেয়া হয় তালা। যদিও উপাচার্যের আশ্বাসে এক পর্যায়ে স্থগিত করা হয় কর্মসূচি।
এর আগে বিএনপিপন্থী অ্যালামনাসরা নির্বাচন বয়কটের পর থেকেই রুয়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্পষ্টতই দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, জামায়াতপন্থী অ্যালামনাসরা সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিএনপি ও জামায়াতপন্থী অ্যালামনাসরা পাল্টাপাল্টি মতামত জানাচ্ছেন।
রুয়া নিয়ে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন হবে কি না— সেটি নিয়ে নতুন করে সংকট দেখা দিয়েছে।
২৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রোডম্যাপ অনুযায়ী, রাকসু নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া গত ১৩ এপ্রিল চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনী আচরণবিধি প্রকাশের তারিখ থাকলেও, এখনও তা প্রকাশিত হয়নি।
আরওপড়ুন<<>>রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে রাবি ভিসির বাসভবন ঘেরাও
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাত সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করলেও, এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকে বসতে পারেনি তারা। এমন অবস্থায় জুন মাসের তৃতীয় অথবা চতুর্থ সপ্তাহে রাকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়ের কথা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হলেও, আদৌও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি না— সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠিত হলেও এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি তাদের কাছে পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন এ কমিশনের প্রধান। যেখানে কমিশনার হিসেবে আছেন: প্রফেসর মো. নিজাম উদ্দীন (সিন্ডিকেট সদস্য); প্রফেসর এফ নজরুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক); প্রফেসর মোহা. এনামুল হক (পরিচালক, মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র); প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান (আইন বিভাগ); প্রফেসর মো. আমিনুল হক (পরিসংখ্যান বিভাগ); প্রফেসর মোস্তফা কামাল আকন্দ (নৃবিজ্ঞান বিভাগ)l
ক্যাম্পাসের বর্তমান অবস্থা সাপেক্ষে জুন মাসে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে রাকসু নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মোস্তফা কামাল আকন্দ জানান, কমিশন গঠিত হলেও এখনও আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। এরইমধ্যে রুয়া ইলেকশনসহ বেশ কিছু বিষয়ে আমরা ক্যাম্পাসে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি। মনে হচ্ছে, স্থিতিশীলতা নানাভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আগে বসুক, এরপরে বলা যাবে ঠিক কবে নাগাদ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার পরে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ বার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৮৯ সালে সর্বশেষ রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন শাখা ছাত্রদলের রুহুল কবির রিজভী এবং জিএস নির্বাচিত হন জাসদ ছাত্রলীগের রুহুল কুদ্দুস বাবু।
আপন দেশ/এমএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।