Apan Desh | আপন দেশ

৪০ ফুট খুঁড়েও সন্ধান মেলেনি শিশু সাজিদের, অভিযান চলছে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৩:৩৮, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

৪০ ফুট খুঁড়েও সন্ধান মেলেনি শিশু সাজিদের, অভিযান চলছে

ছবি : আপন দেশ

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের জন্য খোঁড়া গভীর গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু  সাজিদকে ২৪ ঘণ্টায়ও উদ্ধার করা যায়নি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। 

ইতিমধ্যে তিনটি এক্সকাভেটর দিয়ে ৪০ ফুট গভীর গর্ত তৈরি করা হয়েছে। গর্তটির গভীরতা ১৫০ থেকে ২০০ ফুট বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট প্রায় ৪০ ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে উঠতে পেরেছে।

মূল গর্ত পর্যন্ত পৌঁছাতে দমকল বাহিনীর কর্মীরা বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়ছেন। পাশাপাশি শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখতে অক্সিজেন সরবরাহও অব্যাহত রাখা হয়েছে। 

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মূল গর্তের পাশ থেকে খনন করে শিশুটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। প্রায় ৪০ ফুট গভীরে অনুসন্ধান চালানো হলেও শিশুর কোনও খোঁজ নেই।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, শিশুটি যে গর্তে পড়েছে তার পাশে এস্কেভেটরের মাধ্যমে ৩৫ ফুটের বেশি গভীর খনন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের রেসকিউ টিম খনন করা গর্ত থেকে সে গর্তে সুড়ঙ্গ করছে। নলকূপের জন্য খোঁড়া ওই গর্তের গভীরতা ১৫০ থেকে ২০০ ফুট। এর ভেতরে যেকোনো জায়গায় শিশুটি আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহীর তানোরে সাজিদ নামের দুই বছর বয়সী শিশুটি নলকূপের গভীর গর্তে পড়ে যায়। শিশুটি তার মায়ের হাত ধরে কেটে নেয়া ধানের খেতে হাটছিল। হঠাৎ সে গর্তে পড়ে যায়। সাজিদ উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুলের ছেলে। রাকিব ঢাকায় একটি জুট মিলের ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করেন।

আরও পড়ুন<<>>রাতভর অভিযানেও উদ্ধার করা যায়নি শিশু সাজিদকে

গত বছর পুকুর পাড়ে গভীর নলকূপের জন্য খুঁড়ে রাখা গর্তে হঠাৎ পড়ে যায় সাজিদ। এরপর থেকেই পুরো উপজেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎকণ্ঠা। শুরুতে সাড়া পাওয়া গেলেও ধীরে ধীরে সে সাড়া মিলিয়ে যেতে থাকে। এরপর উদ্ধার অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করতে থাকে। এতে উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত এসকেভেটর দিয়ে মাটি কাটা ও তা সরিয়ে নিতে প্রশাসনকে বেশ বেগ পেতে হয়। ঘটনাস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম।

স্থানীয় লোকজন জানান, রাজশাহীর তানোর উপজেলার পচন্দর ইউনিয়নের এ গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এ এলাকায় বর্তমানে গভীর নলকূপ বসানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কোয়েলহাট গ্রামের কছির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার জমিতে পানির স্তর পাওয়া যায় কি না-তা যাচাই করার জন্য গর্তটি খনন করেছিলেন। পরে তিনি গর্তটি ভরাটও করেন। তবে বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে সেখানে নতুন করে গর্ত সৃষ্টি হয়। সে গর্তেই শিশুটি পড়ে যায়।

শিশুটির মা রুনা খাতুন জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশে মাঠে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার ছোট একটি সন্তান কোলে ছিল। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ মা বলে ডেকে ওঠে। তিনি পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে নেই, গর্তের ভেতর থেকে ‘মা, মা’ বলে ডাকছে। গর্তটির ওপরে খড় বিছানো ছিল। ওখানে যে গর্ত ছিল, সেটা তিনিও বুঝতে পারেননি, ছেলেও। ওই জায়গায় পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে গর্তের ভেতর পড়ে গেছে। লোকজনকে ডাকতে ডাকতেই ছেলে গর্তের নিচে চলে যায়। এরপর থেকে উদ্ধার অভিযান চলছে। এখনও তার সন্ধান পাইনি আমরা।

তানোর থানার ওসি শাহীনুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, উদ্ধারকাজ এখনও শেষ হয়নি। খনন কার্যক্রম চলছে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়