ফাইল ছবি
বাংলাদেশের নিচে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা—এ তিনটি টেকটোনিক প্লেট একটানা নড়াচড়া করছে। এর ফলে ডাউকি, মধুপুর, সিলেট লাইনমেন্টসহ বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ ফল্ট লাইন তৈরি হয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের প্রধান উৎস হলো মধুপুর ফল্ট।
ভূতাত্ত্বিকদের মতে, মধুপুর ফল্টে প্রায় ৪০০ বছর ধরে চাপ জমে আছে। এ চাপ মুক্তি পেলে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮ পর্যন্ত হতে পারে। রাজধানী ঢাকা এ ফল্ট থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, মধুপুর ফল্টে যদি ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পও হয়, তবে ঢাকার ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে।
এদিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর ফল্টের তথ্য সংগ্রহ ও ভূমিকম্পমাত্রা নিরূপণের উদ্দেশ্যে ২০০৭ সালে একটি 'সিসমোগ্রাফ মেশিন' স্থাপন করা হলেও এখন তার কোনো হদিস নেই। ফলে ভূমিকম্পপ্রবণ মধুপুর গড় অঞ্চল ও আশপাশের এলাকার সঠিক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন<<>>প্রশাসন আমাদের কথায় উঠবে-বসবে: শাহজাহান চৌধুরী
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) নরসিংদী থেকে শুরু হওয়া ভূমিকম্পে পুরো দেশ কেঁপে ওঠার পর মধুপুরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, টাঙ্গাইল আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে। ভূমিকম্পের আগে কোনো ধরনের পূর্বাভাস পাওয়া গেলে তারা অন্তত সতর্ক থাকতে পারতেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, সচেতনতা ও প্রস্তুতি থাকলে ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব। উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, টাঙ্গাইল একটি উদীয়মান শহর হলেও নতুন ভবনগুলো পরিকল্পিতভাবে নির্মিত হচ্ছে না। পৌরসভা এসব ভবনের মান যথাযথভাবে যাচাই করছে কি না—তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
এমবিএসটিইউ-এর পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ জানান, প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ করলে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমানো যায়। মধুপুরের নিরাপত্তা জোরদারে আধুনিক কিছু ডিভাইস আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের এক ভূমিকম্পে মধুপুরের অরণখোলা ইউনিয়নের বোকারবাইদ গ্রামে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ওই ফাটলের ব্যাস ছিল ৫–৬ ইঞ্চি এবং গভীরতা প্রায় ২৫–২৬ ফুট।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































