
ছবি: আপন দেশ
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম আগামীকাল শনিবার (০৪ অক্টোবর) থেকে ২৫ অক্টোবর। এ ২২ দিন সরকার ঘোষিত সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতি বছরের মতো এ বছরও ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে এ ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করে। এ সময় নদ-নদী ও মোহনায় ইলিশ মাছ আহরণ এবং সারাদেশে ইলিশ মাছ পরিবহন, মজুতকরণ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে। তাই এ সময়ে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষে পটুয়াখালীতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
এদিকে, পটুয়াখালী জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে ৮০ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে প্রধান ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সহায়তার জন্য নিবন্ধিত ৭৫ হাজার ৪৩ জন জেলেকে সহায়তা হিসেবে প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হবে। শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে দেশের সব নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এনিয়ে বিস্তারিক আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জেলে মৎস্যজীবী সমিতি, জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধি , আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্নে করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলায় ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, নদী, সাগরমোহনায় ও হাটবাজারে মাইকিং, ব্যানার, পোস্টারিং, প্রচারপত্র বিতরণ, জেলেদের সচেতনতা করতে মতবিনিময় ও উঠান বৈঠক। পাশাপাশি প্রধান মৌসুম শুরুর আগেই মৎস্যজীবীরা তাদের মাছ ধরার ট্রলার, নৌযান নদী-সাগর থেকে তীরবর্তী স্থানে নিরাপদ হেফাজতে রাখা, জাল ও মাছ ধরার সরঞ্জাম দুরবর্তী স্থানে সরিয়ে রাখা, নদী ও সাগর মোহনায় ইলিশ বিচরণ ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে দিনেও রাত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, জেলার ইলিশের প্রধান প্রজনন কেন্দ্রে একজন ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষনিক নিয়োগ। জলপথ, লঞ্চ-ট্রলার, সড়ক পথে বাস,ট্রাক, পিকআপ,কভারভ্যান, ট্রলি ইত্যাদি যানবাহনে মাছের চালান নিয়মিত পরিদর্শন করা। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে জেলার সকল বরফ কল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ২২ দিন গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও সমুদ্র মোহনায় কোষ্টগার্ড টহল জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জুম্মার নামাজের সময় মসজিদে মা ইলিশ রক্ষার গুরুত্ব ও আইন ভঙ্গের শাস্তির বিষয় আলোচনা, নামাজ শেষে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ বছরও মা ইলিশ রক্ষা ও ইলিশের নির্বিঘ্ন প্রজনন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হবে এবং ইলিশের উৎপাদন-প্রাচুর্যতা বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করেন তিনি।
আপন দেশ/এমএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।