
ছবি: আপন দেশ
পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এর প্রতিবাদে ডাকা অবরোধে ভয়াবহ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে গুইমারার একটি বাজারে আগুন দেয়া হয়েছে। দোকানপাট ও বসতঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে খাগড়াছড়িতে এ অবরোধ শুরু হয়। পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’র ব্যানারে এ অবরোধ ডাকা হয়েছিল। অবরোধকারীরা জেলার বিভিন্ন সড়কে বড় বড় গাছের গুঁড়ি ফেলে। টায়ারে আগুন দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হননি। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল।
দুপুরে খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে অবরোধকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন>>>‘রাজনৈতিক চাপে পদ নিয়ে শঙ্কায় আছি’
বিকেলে গুইমারা উপজেলার রামেসু বাজারে সবচেয়ে বড় সহিংসতা ঘটে। অবরোধ চলাকালে বাজারে আগুন দেয়া হয়। এতে বাজারের অনেকগুলো দোকান পুড়ে গেছে। এ বাজারের বেশিরভাগ দোকানই পাহাড়ি মালিকদের। আগুনের শিখা বাজারের পাশের কয়েকটি বসতঘরেও ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ ও গুলির পর লোকজন বাজার ছেড়ে চলে যায়। এরপর প্রায় ২০-২৫ জন মুখোশ পরিহিত লোক আসে। তারা রামেসু বাজার ও বসতবাড়ি লুটপাট করে। যাওয়ার সময় তারা মোটরসাইকেল ও বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ বাজারের আগুনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এ সহিংসতার ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দিনভর সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত পাঁচজন গ্রামবাসীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
বিকেলের পর এলাকায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে। অবরোধকারীরা এখন আর সড়কে নেই, তবে তারা আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখার উদ্দিন খন্দকারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি বলেন, একটি পক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি সব জাতিগোষ্ঠীকে মিলেমিশে থাকার আহবান জানান।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।