
ছবি: আপন দেশ
বাংলাদেশে এখন বইছে শরৎকাল। তবে এখনও প্রকৃতিতে বর্ষার স্নিগ্ধতার রেশ রয়েছে। খাল-বিলের থইথই পানিতে ফুটেছে লাল শাপলা। সৌন্দর্য উপভোগ করতে কালীগঞ্জের বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরার গ্রামের লাল শাপলার বিলে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। প্রতিদিন ভোরে প্রকৃতি প্রেমীরা ফুটে থাকা লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন। কেবল সৌন্দর্য্য উপভোগই নয়, লাল শাপলা হয়ে উঠেছে- প্রান্তিক মানুষের জীবিকার উৎসও। এ বিল থেকে শাপলা ও শালুক আহরণ করে হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে অনেকেই।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় আবু তাহের জানান, ভাটিরা গ্রামের সড়ক সংলগ্ন কছম বিলের জলাশয়টির ভাসমান শাপলার নজরকাড়া সৌন্দর্য্য থেকে চোখ ফেরানো দায়। ক্ষণিকের জন্য হলেও পথচারীরা সেখানে একটু বিশ্রাম নেন। এক পলকে তাকিয়ে থাকেন বিলে অসংখ্য ফুটে থাকা লাল শাপলার দিকে। মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় কেউ কেউ ফুলের সঙ্গে নিজেকে বন্দী করেন।
তিনি আরও বলেন, কেবল সৌন্দর্য্য উপভোগই নয়, লাল শাপলা হয়ে উঠেছে প্রান্তিক মানুষের জীবিকার উৎসও। এ বিল থেকে শাপলা ও শালুক আহরণ করে হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে অনেকেই। বিলে নৌকা না থাকায় আগত দর্শনার্থীরা তেমন ঘুরতে পারছেন না। পাড়ে দাঁড়িয়ে বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন তারা।
আরওপড়ুন<<>>সাত জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা
জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার মধ্যাঞ্চলে ভাটিরা গ্রামের অবস্থান। কৃষিতে সম্ভাবনাময় হলেও শীতকালে এ অঞ্চলের নানা রকম সবজি উৎপাদিত হয়। উপজেলার ভাটিরার কছম বিলে লাল শাপলায় বর্ণিল সাজে সেজেছে এক অপরূপ সৌন্দর্যে। প্রতিদিন ভোরে প্রকৃতিপ্রেমীরা ফুটে থাকা লাল শাপলার সৌন্দর্য্য দেখতে ছুটে আসছেন ভাটিরা গ্রামের কছম বিল এলাকায়।
দর্শনার্থী স্কুলশিক্ষক সোহরাব আলী সরকার বলেন, আমি বন্ধুদের সঙ্গে এখানে লাল শাপলা দেখতে এসেছি। পাড় থেকে দাঁড়িয়ে বিলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছি। হালকা বাতাসে দুলে উঠছে ফুলগুলো দেখে অনেক ভালো লাগল। সড়ক সংলগ্ন জলাশয়টির ভাসমান শাপলার নজরকাড়া সৌন্দর্য্য থেকে চোখ ফেরানো দায়। তবে নৌকা না থাকায় বিলের মধ্যে ঘুরতে পারছি না। মাদরাসা পড়ুয়া একাধিক স্থানীয় কিশোর-কিশোরী বলেন, মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে, টুকটুকে লাল শাপলা। আমরা প্রতিদিন সকালে বিলের ফোটা লাল শাপলা দেখে মুগ্ধ হই।
কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শাহিনুর ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, লাল শাপলা, যা রক্ত কমল নামেও পরিচিত। এটি একটি পরিচিত জলজ উদ্ভিদ। উজ্জ্বল লাল রঙের পাপড়ি এবং মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য্যে জন্য বিখ্যাত। এ শাপলা নাতিশীতোষ্ণ ও গ্রীস্মমন্ডলীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে বেশি জন্মায়। এটি গুরুত্বপূর্ণ জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করে। লাল শাপলা জলাশয়ের পানিকে পরিষ্কার রাখতে এবং পানিতে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায়। লাল শাপলার ডাঁটা জনপ্রিয় সবজি, ওষধি গুণসম্পন্ন এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এর বৈজ্ঞানিক নাম (Nymphaea Rubra)।
আপন দেশ/এমএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।