মসজিদে নামাজরত মুসল্লি
ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে নামাজ। আল্লাহর উপর ঈমান আনার পরেই সর্বপ্রথম যে কাজটি সামনে চলে আসে সেটি হল নামাজ। নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত ইসলামি শরীয়তে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নামাজ মানুষকে শৃঙ্খলাবোধ ও ভ্রাতৃত্ববোধ শেখায়।
ঈমান যদি হয় তৌহিদের মূল ভিত্তি, তাহলে আমলের মূল ভিত্তি হল নামাজ। একজন ব্যক্তিকে নিয়মানুবর্তীতা শেখায় নামাজ। পানি যেভাবে ময়লাকে ধুয়ে মুছে সাফ করে ফেলে, তেমনি নামাজ মানুষের পাপ–পঙ্কিল মানসিকতাকে ধুয়ে মুছে সাফ করে ফেলে। মুসলমান ও কাফেরের মধ্যে মূল পার্থক্য হল নামাজ।
মহানবী (সা.) ইন্তেকালের আগে সর্বশেষ যে ব্যাপারে অসিয়ত করেছেন, সেটি হলো নামাজ। আনাস (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, মহানবী (সা.) ইন্তেকালের আগে নামাজের ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া এবং অধীনদের প্রতি সহনশীল হওয়ার অসিয়ত করেছেন।
আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিদায় হজের ভাষণে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, তোমরা নিজ প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করো, তোমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করো, তোমাদের রমজানে রোজা রাখো, তোমাদের সম্পদের জাকাত আদায় করো এবং (নীতিবান) আমিরের আনুগত্য করো, তাহলেই তোমরা স্বীয় রবের তৈরি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (তিরমিজি, হাদিস : ৬১৬)
নামাজের গুরুত্ব
ঈমানের পর ইসলামের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ হলো নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নামাজ হলো দ্বিনের স্তম্ভ। সুতরাং বড় বড় মজবুত অট্টালিকা নির্মাণ করতে গেলে যেমন মূল ফাউন্ডেশনের দিকে লক্ষ রাখা অতি জরুরি, তেমনি নিজের দ্বিন ও ঈমানকে মজবুত রাখতে হলে নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া আরো বেশি জরুরি। সব নবী-রাসুলের শরিয়তে নামাজ আদায় করা আবশ্যক ছিল। (শরহু মায়ানিল আসার, হাদিস : ৯৬২)
নামাজ এমন গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা কখনো ছেড়ে দেওয়ার অবকাশ নেই। ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো। যদি দাঁড়াতে সক্ষম না হও, তাহলে বসে আদায় করো। তাতেও যদি সক্ষম না হও, তবে শুয়ে আদায় করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১১৭)
আরও পড়ুন<<>>টানা ৩ জুমা না পড়লে যে পরিণতি
বেনামাজির শাস্তি
নামাজ না পড়া জাহান্নামে যাওয়ার কারণ। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, জান্নাতের অধিবাসীরা (জান্নাতে যাওয়ার পর) জাহান্নামিদের জিজ্ঞেস করবে, ‘ন জিনিস তোমাদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করল? তারা বলবে, আমরা নামাজ পড়তাম না...। (সুরা মুদ্দাচ্ছির, আয়াত : ৪২-৪৩)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, এবং যে আমার স্মরণ (নামাজ) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা হবে সংকীর্ণ এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়। (সুরা: ত্ব-হা, আয়াত : ১২৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, একজন মুসলমান আর শিরক-কুফরের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ। অর্থাৎ বেনামাজি আর মুশরিকের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮২)
এ ছাড়া মহানবী (সা.) বেনামাজির শাস্তি সম্পর্কে বলেন, জাহান্নামে তাদের মাথা পাথর দ্বারা চূর্ণবিচূর্ণ করা হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৩)
নামাজের ব্যাপারে তাই সব ধরনের অলসতা দূর করে অত্যধিক যত্নশীল হওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষত মধ্যবর্তী নামাজের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়াও একান্ত আদবের সঙ্গে। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৩৮)
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































