বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
আজ ২০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন। ১৯৬৫ সালের এ দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গত বছরের মতো এবারও দলের পক্ষ থেকে দোয়া-মিলাদ, অর্থদান ছাড়া কোনো কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে না।
দলীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন না করার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একটি বিজ্ঞপ্তিতে তিনি নেতাকর্মীদের কেক কাটা, পোস্টার-ব্যানার লাগানো, আলোচনা সভা বা উৎসবমুখর কোনো আয়োজন থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। বরং দোয়া, মানবিক সহায়তা এবং নীরব শুভেচ্ছা প্রদানের মধ্য দিয়েই দিনটি পালন করতে বলা হয়েছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান বগুড়া জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক পথচলা শুরু করেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য হয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রচারণায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা তাকে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনায় নিয়ে আসে।
২০০৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে এবং ২০১৬ সালে ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে তারেক রহমান দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে যুক্তরাজ্য থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সেখান থেকে সব সময় ভার্চুয়ালি দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, নেতাকর্মীদের প্রতি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। আগামী মাসে পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে তিনি দেশে ফিরতে পারেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
তারেক রহমান ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান, সাবেক যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রী রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের মেয়ে ডা. জোবাইদা রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমান সম্প্রতি লন্ডনের কুইনমেরি ইউনিভার্সিটি থেকে আইন শাস্ত্রে ল’ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে যুক্তরাজ্য থেকেই তারেক রহমান সব সময় ভার্চুয়ালি দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন<<>>ইসিকে শক্ত অবস্থানে থাকার আহবান মঈন খানের
আওয়ামী লীগ সরকারের গত প্রায় ১৬ বছর বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, খুন-গুম-নির্যাতন সত্ত্বেও তারেক রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার কারণে দল ছিল ঐক্যবদ্ধ। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের উৎখাতের পর তিনি জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রয়াস চালাচ্ছেন। বিভিন্ন বক্তব্যে তিনি ঐক্যের বার্তা দিচ্ছেন, পেশিশক্তির উত্থানের পরিবর্তে জনমানুষের পক্ষে কাজ করে জনসমর্থন সৃষ্টির বার্তা দিচ্ছেন।
জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিএনপিরই প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তিনি বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের প্রতি নৈতিক রাজনৈতিক চর্চার কঠোর বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। তার এ উদ্যোগ ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পরিবেশের গুণগত পরিবর্তনের গোড়াপত্তন করবে বলে মনে করেন নেতারা।
তারা জানান, বিএনপির মতো সর্ববৃহৎ দলের গুণগত পরিবর্তনের উদ্যোগ অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তিসহ জাতীয় রাজনৈতিক পরিসীমায় এক নবতর সাম্য ব্যবস্থার সৃষ্টি করবে। তারেক রহমানের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও রাষ্ট্র নিয়ে ভাবনা জনগণ গ্রহণ করেছে। বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হিসাবে এক অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এর সুফল পাবেন দেশবাসী।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, তিনি খুব শিগগির দেশে ফিরে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেবেন। তার নিরাপত্তার জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি আমদানির অনুমতিও পেয়েছে দলটি।
জন্মদিন উপলক্ষে দলীয় আনুষ্ঠানিকতা সীমিত থাকলেও, নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আশা–উচ্ছ্বাসে দিনটি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। তাদের প্রত্যাশা— দীর্ঘ নির্বাসন কাটিয়ে তিনি দেশে ফিরে সরাসরি নেতৃত্ব দেবেন এবং আসন্ন নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।





































