Apan Desh | আপন দেশ

ড. ইউনূসের কাছে তারেক রহমানের একহালি প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ১৭ মে ২০২৫

আপডেট: ০০:২৫, ১৮ মে ২০২৫

ড. ইউনূসের কাছে তারেক রহমানের একহালি প্রশ্ন

তারেক রহমান

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন? এটি দেশের বহু মানুষের বড় জিজ্ঞাসা।

তিনি বলেন, দেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করবেন এ আশা করছি।  পরিস্থিতির অযথা ঘোলাটে না করে জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করুন। ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা না করা গেলে পতিত স্বৈরাচারকে মোকাবেলা করা সহজ হবে না। 

শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এনডিএম-এর অষ্টম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ আহবান জানান তারেক রহমান। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, বিএনপিরসহ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য তাদের পরিকল্পনা কর্মপরিকল্পনা নিয়ে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা আহবান জানিয়েছে আসছে। সকল কিছু বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাই সরকার কিন্তু সে আহবানে সাড়া দেয়নি। এ সরকারই বরং জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাকে সুকৌশলে অল্প সংস্কার-বেশি সংস্কার এরকম একটি অভিনব শর্তের বেড়াজালে আটকে দিয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন,  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্ম পরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণ অন্ধকারে। ফলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা বাড়ছে। আমরা প্রতিদিন দেখছি কোন না কোন দাবি নিয়ে মানুষ রাস্তায় নামছে। মাত্র ১০ মাসের মাথায় সরকারের ভেতরে এবং বাইরে এক ধরনের অস্থিরতা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। 

তিনি বলেন, সরকার জনগণের ভাষা,  আশা-আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তেই থাকবে। আমরা মনে করি অস্থিরতা এভাবে বাড়তে থাকলে এ সরকারের পক্ষে সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। সুতরাং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আমরা একসঙ্গে রাজপথে ছিলাম।

তারেক রহমান বলেন, আমাদের অবস্থান থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শক্তি ও সামর্থ্যের প্রতি নেতিবাচক মন্তব্য করিনি। তবে আমরা চুপ থাকলেও জনমনে এ সরকারের প্রতি প্রশ্ন উঠছে।

বিএনপির এ শীর্ষ নেতা  বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যের উপর ভিত্তি করে এবং জুলাই আন্দোলনে হাজারো মানুষের প্রাণ প্রাণের বিনিময়ে বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি রচিত হয়েছে। অথচ জুলাই আগস্টের আন্দোলনে কতজন শহীদ হয়েছেন,  কতজন আহত হয়েছেন, দশ মাসেও কিন্তু সরকার শহীদদের তালিকা ও সংখ্যা চূড়ান্ত করতে পারেনি। অথচ যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় কতজন মানুষ শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, এ মুহূর্তে যদি গুগলে সার্চ করা হয় তাহলে হতাহত মানুষের পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। দুঃখজনক বিষয় হলো- এখন যদি কেউ জুলাই আগস্টের শহীদদের হতাহতদের তথ্য জানতে চান তাহলে কি নির্দিষ্ট সে তথ্য পাওয়া যাবে? এ ব্যাপারে কিন্তু বিরাট সন্দেহ বা প্রশ্ন রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গণঅভ্যুত্থানের সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে দশ মাসেও যদি জুলাই আগস্টের শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত না করতে পারে, তাহলে সেটা সরকারের সক্ষমতা বহন করে কিনা এ প্রশ্নটি রেখে যাচ্ছি। 

তারেক রহমান বলেন, এখানে আরেকটি প্রশ্ন এসে যায় সরকার কি হতাহতদের ব্যাপারে উদাসীন নাকি ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন? এটি দেশের বহু মানুষের বড় জিজ্ঞাসা। 

বর্তমান সরকার জবাবদিহি মূলক নয় মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আবারো স্পষ্ট করে জানাতে চাই, করিডোর কিংবা বন্দর দেয়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ নয়। এ সিদ্ধান্ত নেবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ বা জনগণের সরকার। বর্তমান সরকারের আইনগত ও রাজনৈতিক বৈধতা নিয়ে হয়তো প্রশ্ন নেই। তবে এ সরকার কোনভাবেই জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার নয়। সুতরাং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণের জবাবদিহি মূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রাধিকার হতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর সংস্কার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, এনবিআর সংস্কার নিয়ে তেমন কোনো দ্বিমত নেই। তবে সংশ্লিষ্ট সঙ্গে আলোচনা না করে তড়িঘরি সংস্কার শুরু করায় হিতে বিপরীত হয়েছে। নিয়মিত রাজস্ব আদায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে চলতি বছরের হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে।

এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, এনডিএম কোনো ড্রায়নিং রুমে জন্মগ্রহণ করেনি।  আন্দোলন- সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে

তিনি বলেন, জনসেবা করাই আমাদের লক্ষ্য। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনেও রাজপথে থেকে ভূমিকা রেখেছে নেতা-কর্মীরা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, এনডিএম এর মহাসচিব মমিনুল আমিন, উচ্চ পরিষদ সদস্য পারভেজ খান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ বিদেশি অতিথি ও দলটির নেতাকর্মীরা।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়